রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। গত রবিবার এ ঘটনার পর মেয়েটি আর বিদ্যালয়ে যায়নি।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় মেয়েটি বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। পথে মৃত আকবর আলীর ছেলে পাষাণ মিয়া (৪৪) মেয়েটিকে টেনেহিঁচড়ে পথ থেকে নিয়ে নির্যাতনের চেষ্টা চালান। এ সময় শিশুটি দৌড়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে ভয়ে কাঁপতে থাকে। পরে শিক্ষকরা গিয়ে ভুট্টাক্ষেত থেকে বই-খাতা ও ওড়না নিয়ে আসেন। শিক্ষকরা ঘটনার দুই দিন পর বখাটেকে ডেকে এনে গোপনে মীমাংসা করে দেন। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বখাটের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে শিশুটির পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেন। এমনকি আর যাতে এ ধরনের কোনো অভিযোগ না আসে সে জন্য পরিবারকে শাসানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার মা-বাবার সঙ্গে। এ সময় শিশুটির দিনমজুর বাবা সাদেক আলী বলেন, ‘আমার মেয়ে খুবই ভয় পাইছে। এত বড় একটা ঘটনা, শিক্ষকরা টাকা খেয়ে বখাটের পক্ষ নিয়ে কোনো বিচার করল না? উল্টা আমার মেয়েকেই ধমক দেয়। কয়, তোর আর স্কুলে আসার দরকার নেই। মেয়ে আমার ভয়ে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। পরে পাশে একটি মাদরাসায় ভর্তি করাইয়া দিছি।’
মেয়ের ভাই হারুন-অর রশীদ বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ওরা ধনী মানুষ। গেরামের মানুষ তাগর কথাই শোনে। আমগর কথা নেয় না। বখাটে পাষাণের ভাই হুমকি দিয়া কইছে, এ নিয়া থানা পুলিশে গেলে তোর বোনকে খুন করে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ফেলে দিব। স্যাররা কয়, এ নিয়া আর বাড়াবাড়ির দরকার নেই। ’ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, ‘আমরা ওই বখাটেকে বিদ্যালয়ে ডেকে এনে চড়থাপ্পড় মেরেছি। সে অপরাধ স্বীকার করে মেয়ের বাবার কাছে পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না, এমন মুচলেকা দিয়েছে। ’ মেয়েটি বিদ্যালয়ে আসছে না কেন? তাঁর জবাব, কয়েক দিন গেলে এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। রৌমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাকে কেউ জানায়নি। তার পরও খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব। ’ রৌমারী থানার ওসি এ বি এম সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়ের পরিবার বা শিক্ষকরাও আমাদের অবহিত করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *