রংপুর প্রতিনিধি.
রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি অনুমোদন করেছে মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে মোজাফফর হোসেনকে সভাপতি ও শহিদুল ইসলাম মিজুকে সেক্রেটারী করে ৩৭ সদস্যের মহানগর এবং সাইফুল ইসলামকে সভাপতি এবং রইচ আহমেদকে সেক্রেটারী করে ৩৪ সদস্যের জেলা বিএনপির আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। এই কমিটির মাধ্যমে দীর্ঘদিনের প্রকাশ্য কোন্দল আরো জোড়ালো হয়েছে রাজপথের ত্যাগী, কর্মী বান্ধব, মামলা-হামলা,নির্যাতনের শিকার, সাবেক কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাত্রদল নেতা, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন আহবায়ক, রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান সামুকে বাদ দিয়ে কমিটির করার মধ্যে দিয়ে। জননন্দিত নেতা সামুকে বাদ দেয়ায় তৃণমুলের বিএনপিসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ওলামা দল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, তরুণ দল, আইনজীবি ফোরাম, জাসাস, জিয়া পরিষদসহ বিএনপির সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। রংপুর বিএনপিকে চাঙ্গা করতে রাজপথের সাহসী সৈনিক সামসুজ্জামান সামুর বিকল্প নেই বলে জানান তৃণমুলের নেতাকর্মীরা। তারা আরো জানান,
রংপুরে বিএনপিকে একাট্রা ও চাঙ্গা করার সফল উদ্যোগকে আরও বেগবান করতে মহানগর বিএনপির সভাপতি হিসেবে সামসুজ্জামান সামুকে দেখতে চান নীতি নির্ধারক, তৃনমুল নেতাকর্মী, সমর্থক ও নগরবাসি।
সুত্র জনায়, গতকাল কেন্দ্রীয় সহ দপ্তর সম্পাদক বেলাল হোসেন প্রেরিত মহাসচিব স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে রংপুর মহাগর ও জেলা বিএনপির কমিটি অনুমোদনের কথা জানানো হয়। তবে ১৫ মে মহাসচিব কমিটি অনুমোদন করলেও তা দপ্তর থেকে প্রকাশ করা হয় ২৬ মে।

এদিকে অনুমোদিত জেলা ও মহানগর বিএনপির এই কমিটির মাধ্যমে রংপুরে দীর্ঘদিনের প্রকাশ্য বিরোধ আবরো জোড়ালে হয়েছে। অতীতের সব বিরোধ মিটিয়ে সবাইকে একাট্রা ও চাঙ্গা করার কেন্দ্রীয় উদ্যোগে সবাই খুশি হলেও একটি বড় ধরনের গোস্যা ও ক্ষোভ কাজ করছে তাদের মধ্যে। আর তা হলো রাজপথের সাহসী সৈনিক সামসুজ্জামান সামুকে মহানগর কমিটির সভাপতি না করায় নীতি নির্ধারক, তৃণমুল নেতাকর্মী ও সমর্থক ও সাধারনের মধ্যে চাপা ক্ষোভ লক্ষ করা গেছে। শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ সেই ক্ষোভ-পাশাপাশি আশার কথা জানিয়েছেন রংপুর বিএনপির নীতিনির্ধারক ও নেতাকর্মীরা। সামুকে বাদ দেয়ায় নেতাকর্মীসহ সকলের মাঝে হতাশাও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তৃণমুলের নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির রংপুরের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেনকে কেন্দ্রীয় পদে রেখেই সভাপতি পদে সামসুজ্জামান সামুকে পদায়ন করলেই রংপুর বিএনপিতে আর কোন কোন্দল থাকবে না। আগামী মেয়র নির্বাচনসহ জাতীয় পার্টির স্থান দখল করে নিয়ে রংপুর হবে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্গ। বিষয়টি দ্রুত চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন রংপুর বিএনপির নেতাকর্মী ও নীতিনির্ধারকরা।
অনুমোদিত মহানগর কমিটির ৫ নং সহ-সভাপতি বিএনপির ডাকসাইটেড নেত্রী ও নীতিনির্ধারক এ্যাডভোকেট রেজেকা সুলতানা ফেন্সি জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন একজন বিজ্ঞ রাজনীতিক। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ সভাপতি। তাকে যদি কেন্দ্রে আরও কোন ভালো পদ দিয়ে মহানগর সভাপতি হিসেবে সামসুজ্জামান সামুকে পদায়ন করা যেতো, তাহলে রংপুর বিএনপিতে আর কোন কোন্দল থাকতো না।
অন্যদিকে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা আরো জানান, রংপুরে আন্দোলন সংগ্রামের কান্ডারি সামু। তার নামে অর্ধশতাধিক মামলা। প্রশাসন তাকে গুম করাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানী করার চেষ্টা করেছে করছে। জীবন বাজি রেখে বিএনপির জন্য মাঠে লড়ছেন এই নেতা। এখন তিনি ফেরারী জীবন যাপন করছেন। কর্মী সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন নি। তাকে বঞ্ছিত করে রংপুরে বিএনপিকে এগিয়ে নেয়ার উদ্যোগ মাঠে সেভাবে পানি পাবে না।
তৃণমুলের নেতাকর্মীরা জানান, রংপুর বিএনপি মানেই সামু। আন্দোলন সংগ্রাম মানেই সামু। রংপুর বিএনপিকে রাজপথে নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতাই হচ্ছে সামু। সামুর বিকল্প নেই। তাকে ছাড়া রংপুর বিএএনপি অচল। বড়ভাই ও টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন দেয়ায় তৃণমুলের নেতাকর্মীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, টাকাই দিয়ে যদি পদ পেতে হয় তাহলে তো বাসায় শুয়ে থেকেই পদ পাওয়া যায়। আর যে কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে তাদের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করার কোন সাহস ও হিম্মত নেই। তাই অবিলম্বে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের প্রাণ পুরুষ পরিক্ষিত নেতা সামসুজ্জামান সামুকে মহানগর বিএনপির সভাপতি করা হউক। তা না হলে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা গণপদত্যাগ করবেন বলেও হুশিয়ারি দেন।
এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, রংপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান সামু ইতোমধ্যেই ঢাকায় পৌছে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করার অপেক্ষা করছেন। তিনি ইতিমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে নেতাদের সাথে সাক্ষাত করেছেন। তার সাথে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ বিএনপির বহু নেতাকর্মী ঢাকায় অবস্থান করছেন।
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু জানান, এই কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তার সাথে এ বিষয়টি নিয়ে কোন কথা হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *