ভোলাহাট(চাঁপাইনবাবগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
শুধু চোখের পানি। ঢুঁকরে কেঁদে কেঁদে অপলক চোখে বর্ণনা করলেন ঈদ উদ্যাপনের কথা ভোলাহাট উপজেলার বজরাটেক মন্সিগঞ্জ গ্রামের মৃতঃ নেজামুদ্দিনের ছেলে আব্দুর রউফ(৫৫)। তিনি একজন ভ্যান চালক ছিলেন ৭ বছর পূর্বে। পরিবারে স্ত্রী বিয়ে বয়সী এক মেয়ে অকর্ম এক ছেলে নিয়ে ভ্যান চালিয়ে কোন রকম দিন আয় করে সংসার চালাতে গিয়ে হঠাৎ ভ্যান উল্টে দূর্ঘটনার শিকার হন। জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে হাসপাতাল হাসপাতাল ছুটতে হয় চিকিৎসার জন্য। মেরুদন্ড ভেঙ্গে পঙ্গু হয়ে পড়েন রউফ। টানাপড়েনের সংসারে আয় না থাকায় আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে চিকিৎসা খরচ কোন রকম চলতে থাকলেও ক’দিন যে না যেতেই মূখ ফিরে নেন আত্ময়-স্বজনেরা। মৃত্যর সাথে পঞ্জা লড়তে হয় রউফকে। এক সময় অর্থাভাবে চিকিৎসাও বন্ধ হয়ে পড়ে। ঔষধ পর্যন্ত কিনে খেতে পারেন না তিনি। সরকারী সুযোগ সুবিধার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, গত বছর তার নামে স্থানীয় ইউপি সদস্য একটি ভিজিডি কার্ড করলে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় কেটে দেয়া হয়। পরে ঈদ আসে যায় সরকার ভিজিএফ কার্ড দিলেও বড়লোকদের নামে কার্ড হলেও তার নামে কোন কার্ড হয় না। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয় তাকে বলে কেঁদে যান রউফ। মেঝেতে শুয়ে দীর্ঘ ৭ বছর। মাজার নীচ দিকে কোন শক্তি নাই। উঠা বসার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। প্রস্রাব, পায়খানা স্ত্রীর হানায্য নিয়ে করতে হয়। বেঁচেও মরে গেছে যে কর্মক্ষম মানুষটি তার খোঁজ নিতে এলাকার কেউ আসেনি। ময়মনসিহের গোয়াল ঘরের এক বৃদ্ধার মাংশ শিয়ালে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ার মত অবস্থার খবরে স্থানীয় সংসদ সদস্য বৃদ্ধার সার্বিক সুবিধা দেয়ার জন্য এগিয়ে এসে দেশ প্রেমীকের পরিচয় দিয়েছিলেন। এমন কি কোন ব্যক্তি নেই এ অসহয় ব্যক্তিটির পাশে দাঁড়িয়ে তার দায়িত্ব নেয়ার। এ অসহয় ব্যক্তিটির ঈদ আনন্দ হয়েছে চোখের পানির সাথে। তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও তাদের অসহয়ত্বের কথা জানাতে গিয়ে চোখের পানির বন্যা বয়ে দিয়ে বলেন, তাদের জন্য পৃথীবিতে কেউ নাই ঈদ বলে কিছু আছে তা তারা ৭ বছর ধরে বুঝতে পারে না বলে ঢুকরে কেঁদে কেঁদে বলৈন। কেউ যদি চিকিৎসা খরচ নিয়ে এগিয়ে এসে দানের হাত বাড়িয়ে পাশে দাঁড়াতো তবে অন্তত বেঁচেও মরে যাওয়া মানুষটি কিছুটা হলেও শান্তি পেত বলে আবেগ প্রকাশ করেন পরিবারটির অন্য সদস্যরা। পরিবারটি সরকারী ও বে-সরকারী সহায়তার দৃষ্টি আর্কষণ করেছেন।