শফিউল আলম শফি,কুড়িগ্রাম ঃ
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি প্রবেশ করছে নতুন নতুন এলাকায়। পানিতে তলিয়ে গেছে চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর ও সদর উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের দেড় শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ।
এসব এলাকার গ্রামীণ কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। নি¤œাঞ্চলের মানুষজন গত ৩দিন ধরে পানিবন্দী থাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকটে পড়েছে অনেকেই। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা। বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে এখনও কোন সরকারী বেসরকারী ত্রান তৎপরতা শুরু হয়নি।
ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চর যাত্রাপুর ইউনিয়নের নজির হোসেন বলেন, গত তিন দিন ধরে পানিতে পড়ে আছি। বাড়িতে এক কোমর পানি। কোন রকমে চৌকির নীচে ইট দিয়ে উচু করে দিন পার করছি। এ অবস্থায় রান্নাবারাও ঠিক মতো করতে পারছি না। মজুদ খাবারও ঘরে নেই।
একই এলাকার শাহেরা খাতুন বলেন, ঘরে পানি উঠায় ছোট ছোট বাচ্চা ও হাস মুরগী নিয়ে বিপদে আছি। বাইরে বের হতে পারছি না। পানি অভাব, খাবারের অভাবে আছি।
চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ পানিবন্দী জীবন যাপন করছে। সেই সাথে কড়াই বরিশাল, মনতলা, শাখাহাতি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করছে। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের লিস্ট তৈরি করে পাঠালেও এখনও কোন ত্রান পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, জেলার নদ-নদী তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল গুলোতে পানি প্রবেশ করলেও বন্যা পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য মেডিকেল টিমসহ আমাদের সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া আছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।