রোকনুজ্জামান মানু উলিপুর(কুড়িগ্রাম) ঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী অববাহিকার ৪ ইউনিয়নের চর ও দ্বীবচরের প্রায় ১৫ টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। এসব গ্রামের বন্যা কবলিত মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে পাশর্^বতি উচু স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির কারনে উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ গ্রামের দেড় শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। গতকাল উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের গাবুরজান কামারটারী, শ্যামপুর, চরদাগারকুটি, চর গুজিমারী, নয়াদারা, নীলকন্ঠ, তাঁতিপাড়া, বাবুরচর, মাঝিপাড়া, হাতিয়াগ্রাম ও চর মোহাম্মদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামগুলোর বেশির বাড়িতে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। বাড়ির লোকজন পার্শ^বর্তি উচু জায়গায় গবাদি পশুসহ আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে কলাগাছের ভেলা তৈরি করে বাড়ির উঠানে রেখে দিয়েছে। বন্যার পানিতে অনন্তপুর দাগারকুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর বাগুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ডুবে গেছে। ফলে বিদ্যালয় দু’টিতে ক্লাশ বন্ধ রয়েছে। অনেকের ধারনা ব্রহ্মপূত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব ইউনিয়নের চরের বেশিরভাগ গ্রাম তলিয়ে যাবে। মাঝিপাড়া গ্রামের দিনবন্ধু জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পানিতে তলিয়ে যাবে গ্রামটি। তবে গ্রামের মানুষজন কলাগাছের ভেলা ও নৌকা বাড়ির উঠোনে রেখে দিয়েছে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় গ্রামবাসিরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন। হাতিয়া বাবুর চর গ্রামের আলেকনুর জানান,গবাদিপশু নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ বেকায়দায় রয়েছে। গবাদি পশু উঁচু স্থানে রেখে দিলেও খাদ্য যোগান দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন জানান, বিন্ধুরচর, মশালেরচর, বালাডোবা, ফকিরেরচর, আলআমিন, ইসলামপুর, মাষ্টারপাড়াসহ বেশিরভাগ গ্রাম তলিয়ে গেছে। গত ৭ দিনের ব্যবধানে আলআমিন বাজার, উত্তর বালাডোবা ও দক্ষিন বালাডোবা গ্রামের প্রায় ১শত ৫০টি বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙ্গনকবলিত মানুষজন পাশর্^বর্তি উচু ভিটায় আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া সাহেবের আলগা ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়া ৫ সহশ্রাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বুড়াবুড়ি ইউনিয়ের ব্রহ্মপূত্র চর অববাহিকর ৭টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ ৪ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জন-প্রতিনিধিরা জানান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ ফিজানুর রহমান জানান, বন্যা মোকাবেলায় সব রকম প্রস্ততি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *