ভুরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
আমার মৃত্যুর জন্য দায়ি জাহেদা। আমার জীবনটা নষ্ট করেছে কাওছার। মৃত্যুর জন্য এই দুইজনের নাম চিরকুটে লিখে এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কেদার গ্রামে। মৃত কিশোরীর নাম সুবর্না আক্তার সুমনা (১৭)। সুমনা ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।
মৃত্যুর আগে লেখা চিরকুটে আরোও লেখা রয়েছে,“ আমার জীনের মূল্য নেই, এসবের পিছনে সব দায়ি জাহেদা, আমি এই দুনিয়া থেকে চলে যাইতেছি, আমি তখনি শান্তি পাব যখন জাহেদা আর কাওছার সারা জীবন জেলে ধুকে ধুকে মরবে”।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সাদুমোড় এলাকার শহিদুল ইসলামের কিশোরী মেয়ে সুমনার সাথে বাড়ির পাশের আজাদ আলীর ছেলে কাওছারের (২২) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘ দিন মন দেয়া নেয়া একপর্যায় তাদের মাঝে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন হয়। এতে কিশোরী গর্ভ ধারণ করে। বিষয়টি লোকসমাজে জানাজানি হলে মেয়ের পরিবার বিয়ের জন্য কাওছারকে চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য শালিস বসে। এতে কোন প্রকার সুরাহা হয় না। অপর দিকে কাওছার গোপনে অন্যত্র বিয়ে
করে। পরে উপায়ান্ত না পেয়ে মেয়ের পরিবার কাওসারসহ ৪জনের নামে কুড়িগ্রাম আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। আদালত কচাকাটা থানাকে মামলটি ১০ জানুয়ারীর মধ্যে রেকর্ড করার আদেশ দেয়।
এদিকে মেয়ের গর্ভের সন্তানের বয়স পাঁচ মাস পার হয়ে গেলেও গর্ভের সন্তানের পরিচয় ও প্রেমের স্বীকৃতি না পেয়ে ৮ জানুয়ারি বুধবার রাতে বিষপান করে সুমনা। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ জানুয়ারী শনিবার সকালে মারা যায় সুমনা। পরে ময়না তদন্ত শেষে আজ (১২ জানুয়ারী) রবিবার সন্ধ্যায় সুমনার মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সারোয়ার হোসেন জানান,আদালতের আদেশ পাওয়ার পর মামলাটি ৭ জানুয়ারী রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *