কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক গৃহবধু ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, শনিবার (০৩ জুলাই) পৌরসভার নারিকেলবাড়ি মন্ডলপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ বিকালে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও শ্বাশুড়িকে থানায় নেয়া হয়। গৃহবধুর পিতার বাড়ির অভিযোগ তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, উলিপুর পৌরসভার নারিকেলবাড়ি মন্ডলপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম ছক্কুর ছেলে মশিউর রহমানের (২৫) সাথে প্রায় এক বছর পূর্বে চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের বজর দিয়ারখাতা গ্রামের নুর ইসলামের নুরেচা বেগমের (২০) বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ ৯০ হাজার টাকা দেয়া হয়। কিছুদিন সংসার করার পর জামাই মশিউর রহমান, শ্বশুর সাইফুল ইসলাম ও শ্বাশুরি মর্জিনা বেগম গৃহবধুকে পিতার বাড়ি থেকে সংসারের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ট্রাংক, সুকেচ, থালা বাসুনসহ ছেলের জন্য বাইসাইকেল দাবী করে আসছিল।
গৃহবধুর শ্বশুর সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে পুত্রবধু দেয়া ভাত খেয়ে সামনের বাজারে আমি চা খেতে যাই। এসময় ছেলে মশিউর সকালে রাজারহাট উপজেলার নাজিমখাঁন এলাকায় বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে চলে যান। আমার স্ত্রী ও মেয়ে পাশ্ববর্তী জমিতে মাছ ধরতে যায়। বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগে পুত্রবধু ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। এরপর আমরা খবর পেয়ে বাড়িতে এসে লাশ নামিয়ে বিছানায় রাখি। পুত্রবধূ কি কারনে আত্মহত্যা করেছে তা আমরা জানি না।
নিহতের ভাই এনামুল হক (২২) ও পিতা নুর ইসলাম শনিবার বিকালে থানায় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, নুরেচা বেগম শ্বশুর বাড়ির চাহিদা মেটাতে না পারায় প্রায় সময় স্বামীর পরিবারের লোকজন তাকে নির্যাতন করত। ১০-১২ দিন পূর্বে নুরেচা তার পিতার বাড়িতে যায় এবং সেখান থেকে ৪দিন পূর্বে স্বামীর বাড়িতে খালি হাতে ফিরে আসে। নিহতের ভাই এবং পিতার দাবী, নুরেচা বেগমকে নির্যাতন করে রাতের কোন এক সময় হত্যা করা হয়েছে। এরপর শনিবার দুপুর ১২টায় আমাদেরকে জানানো হয় নুরেচা বেগম ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় তারা গৃহবধুর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিচার দাবী করেন।
এদিকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ শনিবার বিকালে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধুর স্বামী মশিউর রহমান ও শ্বাশুড়ি মর্জিনা বেগমকে থানায় নিয়ে আসে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় আনা হয়েছে। বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *