নাগেশ্বরী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের কচাকাটায় গার্মেন্টস পোশাক বাকী নিয়ে টাকা পরিশোধ না করায় বিরোধকে কেন্দ্র করে এক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা,লুটতরাজ ও ৫জনকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে ৯ আগষ্ট শুক্রবার রাত ৮টার সময় কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা থানার পুর্ববিষ্ণুপুর সবেদের মোড় এলাকায়। জানাগেছে উক্ত গ্রামের আব্দুল করিম দর্জির পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন থেকে নিজেই ঢাকার কামরাঙীর চরে ক্ষুদ্র গার্মেন্টস দিয়ে বিভিন্ন পোশাক তৈরি করে সারা বাংলাদেশে সাপ্লাই দিয়ে আসছিল। এদিকে ভুরুঙ্গামারী থানার সোনাহাটের গার্মেন্টসের কাপড় বিক্রেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে আতিকুর গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট থেকে কয়েকবার গার্মেন্টস এর পোশাক ক্রয় করে। সর্বশেষ তথ্যমতে গত ৩০ মার্চ/২০২৪ ইং ঘটনার মুল হোতা মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে আতিকুর গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট ঈদুল ফিতরে বিক্রির জন্য বিভিন্ন আইটেমের ৪১০৩০/=টাকার পোশাক ক্রয় করে পুর্বের বাকীসহ মোট বাকী ৭২১২০/=টাকার মধ্যে নগদ ২৯৬০০/=টাকা পরিশোধ করে। বাকী টাকা পরবর্তীতে ঈদের বেচাকেনা শেষে পরিশোধ করার অঙ্গীকার করে। আরও জানাগেছে গার্মেন্টস মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের পিতা মোঃ আব্দুল করিম দর্জি চট্রগ্রামের মেসার্স জান টি হাউস এর কচাকাটা ও ভুরুঙ্গামারী থানা এলাকার কমিশন এজেন্ট হিসাবে বিভিন্ন পন্য সরবরাহ করে আসছে। পোশাক ক্রেতা সাইফুল ইসলাম আতিকুরের কাছে একাধিকবার পাওনা টাকা চাওয়া সত্বেও বাকী টাকা পরিশোধ না করায় গামেন্টস মালিক মোস্তাফিজুর রহমান গত ৯ আগষ্ট রোজ শুক্রবার বিকাল ৪ ঘটিকার সময় বিবাদীর সোনাহাটে কাপড়ের দোকানে গিয়ে টাকা পরিশোধের চাপ দিলে এক পর্যায়ে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে মোস্তাফিজুর রহমান অনতি বিলম্বে টাকা পরিশোধের কথা বলে বাড়িতে চলে গেলে পাওনা টাকা চাওয়ার জের ধরে রাত ৮.৩০টার সময় সাইফুল ইসলাম আতিকুর তার শ্বশুড় বাড়ির দুর সম্পর্কের আত্মীয় পশ্চিম বিষ্ণুপুর গ্রামের ফয়জার রহমান(৪০),আফজাল হোসেন(৩৭)এর নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্র,লোহার রড,চাইনিজ কুড়াল,কসাইয়ের মাংস কাটা ধারালো ছোড়া,দা,বেকি এবং বাঁশের লাঠি নিয়ে উক্ত আব্দুল করিমের বাড়িতে প্রবেশ করে টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানকে গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় বাড়ির মালিক তার বাবা আব্দুল করিম এগিয়ে আসলে তাকে প্রথমে মারপীট ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আব্দুল করিমের দুই পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান,মিজানুর রহমান,স্ত্রী মর্জিনা বেগম,কন্যা কাকলী বেগম,পুত্রবধু সুমাইয়া বেগম এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এরোপাথারী মারপীট ও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বাড়ি ভাংচুরসহ লুটতরাজ চালায়। এ সময় আব্দুল করিমের ঘরে রাখা কোম্পানীর মালামাল বিক্রির নগদ ৪লাখ ৯০ হাজার ৫শতটাকাসহ ১ লাখ ৬০হাজার টাকার কোম্পানীর গুড়া হলুদ,মরিচের গুড়া,চা পাতি,চকলেটের প্যাকেট লুটতরাজ করে। এ সময় তাদের আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে সংঘবদ্ধরা হামলাকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে গেলে ঐ রাতেই এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। আহতদের চিকিৎসার শেষে আব্দুল করিম বাদী হয়ে কচাকাটা থানায় ২৩ আগষ্ট সাইফুল আলম আতিকুর,ফয়জার রহমান,আফজাল হোসেনসহ ১৬ জনের নামে ফৌজদারী দন্ডবিধি ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩২৬//৩০৭/৩৮০/৪২৭/৫০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন যার নং ০৮,তারিখ ২৩.০৮.২০২৪ ইং। মামলার অন্যান্য আসামীরা হচ্ছেন
নুরনবী, শহিদুল ইসলাম আব্দুল হামিদ, মজিবর রহমান,সাকিব মিয়া,নুরমোহাম্মদ,ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান ও তার পুত্র ওমর ফারুক,আজিবর রহমান,মোজাম্মেল হক,এনামুল হক,আব্দুল খালেক,মমিনুর রহমান ও আব্দুর রশিদ। অপরদিকে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে কচাকাটা থানার নয়ানাটারী গ্রামের আব্দুল হামিদের পুত্র ফরিদুল ইমলাম গত ২৮.০৮.২০২৪ ইং তারিখে একটি মামলা দায়ের করেছেন যার নং ১০।
কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শ্রী বিশ্বদেব রায় জানান,এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত চলমান আছে এবং ঘটনায় জড়িত আসামীদের কয়েকজন জামিনে রয়েছে অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *