কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের কচাকাটায় মহিষ চুরি মামলায় চর-কৃষ্ণপুর গ্রামের সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্রের আরও ২ চোরকে গ্রেপ্তার করেছে কচাকাটা থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ২ মহিষ চোর হচ্ছে মোঃ খোকন মিয়া ও লুৎফর রহমান।
এলাকাবাসীরা জানায়,কচাকাটা থানার বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের চরকৃষ্ণপুর গ্রামে ঝুনু ডাকাতের ভাতিজা মাসুদ আলমের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্র দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু মহিষ চুরি করে এনে গোপনে জবাই করে মাংস গুলো স্থানীয় সিন্ডিকেটের কসাইদের নিকট বিক্রি করে আসছে। আবার কিছু গরু মহিষ চোরাই পথে বিভিন্ন হাটকাজারে লক্ষ লক্ষ টাকা বিক্রি করে আসছে। এদিকে গরুচোর চক্রটি এলাকাবাসীর অনেকের গরু মহিষ চুরি করে চোর সনাক্ত হলেও বিচার চাইতে এলাকাবাসীর অনেকে গরু চোর চক্রের হামলার শিকার হতে হয়। কচাকাটা থানায় এলাকাবাসীর অনেকে গরু-বাছুর চুরির বিষয়ে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার না পেয়ে গরুচোরদের জিম্মি দশা থেকে মুক্তির দাবীতে ৮ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করলে বল্লভেরখাষ ইউপি সদস্য ইসমাইল হোসেন ও সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্রের প্রধান মাসুদ আলম কৌশলে এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভা বন্ধ করে দিয়ে ঘটনার সত্যতা যাচাই না করেই লুৎফর রহমানকে বাদী সাজিয়ে এলাকাবাসীর ১৫/১৬ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করলে এলাকাবাসী আদালত থেকে জামিন নিয়ে সংঘবদ্ধ গরুচোরদের গ্রেপ্তারের দাবীতে ১৬ সেপ্টেম্বর মাদারগঞ্জ বাজার সড়কে ঘন্টা ব্যাপী মানব বন্ধন করে। অপরদিকে সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্রটিও পরের দিন এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে।এলাকাবাসী থানা পুলিশ কর্তৃক গরুচোরদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করায় বাংলাদেশ পুলিশ রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি,কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার,কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক,নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার,ভুরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বরাবর গরুচোরদের গ্রেপ্তারের দাবীসহ গরুচোরদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে টনক পড়ে কচাকাটা থানা পুলিশের। অভিযোগ পাওয়া মাত্র ভুরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোরশেদ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা নিম্চিত করতে কাচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মুর্তজাকে নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১২ অক্টোবর মহিষ চুরির অপরাধে আবু সাঈদ বাদী হয়ে কচাকাটা থানায় সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্রের সদস্যদের নামে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই ঐ গ্রামের সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্রের সদস্য আব্দুল হামিদের পুত্র শহিদুল ইসলাম(৩৫) ও ১৩ অক্টোবর এছাহাক আলীর পুত্র আমির হোসেন এবং ১৪ অক্টোবর তদন্তে প্রাপ্ত মজনু কসাইকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এদিকে ৩ জনকে গ্রেপÍার করে জেলহাজতে পাঠানোর পর সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্রের সদস্যরা অনেকে গাঁ ঢাকা দিলে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৯ অক্টোবর কচাকাটা থানা পুলিশ খোকন মিয়া ও লুৎফর রহমান নামে আরও ২ মহিষ চোরকে রংপুরের তাজহাট জমিদার বাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কচাকাটা থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান,মহিষ চুরির ঘটনায় জড়িত ২ জনকে রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে। মামলায় অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।গরু চোরদের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের সাড়াশি অভিযানকে প্রশংসা করে এলাকাবাসী জানান,গরুচোর সর্দার মাসুদ রানাসহ আরও কয়েকজনকে রহস্যজনক কারনে আসামী না করায় রাঘব বোয়ালদের বাদ দিয়ে চুনোপুটিদের গ্রেপ্তার করে এলাকায় গরু চুরি কোন ক্রমেই নির্মুল সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *