কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামে আন্দোলনকারীদের সাথে যোগ দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা কর্মী ফলে সকাল থেকে কুড়িগ্রাম শহর ছিলো থমথমে। ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা জমায়েত হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে। পুলিশ ও বিজিবি মাঝে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল ছোড়া শুরু হয়। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে এ সংঘর্ষ। ত্রিমুখী সংঘর্ষে জেলা আ’লীগ সভাপতি মো: জাফর আলী (সাবেক এমপি), সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম রতন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু, মোস্তাফিজার রহমান সাজু, উমর ফারুক, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ উভয়পক্ষের শতাধিক আহত হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা কুড়িগ্রামে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম টুকুর মোটরসাইকেলসহ ৫টি বাইক আগুনে পুড়ে দেয়। এছাড়া ফুলবাড়ি উপজেলায় বিক্ষোভকারীরা উপজেলা পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভাংচুর করে। এসময় তারা ৪টি মোটর সাইকেল পুড়ে দেয়। পরে তারা ফুলবাড়ী থানা ঘেরাও করে।
আহতদের মধ্যে অর্ধশতাধিক কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আন্দোলনকারীদের মধ্যে গুরুতর আহত মুশফিকুর রহমান সাঈদ (২৪) ও নকুল (৩২) এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর আলী ও সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন মঞ্জুকে আশংকাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহিনুর রহমান শিপন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের ঘোষপাড়া এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এতে আন্দোলনকারীরা জেলা আ’লীগ কার্যালয় ও জেলা পরিষদ অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। কয়েকদফা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক আহত হয়।
এর আগে সকালে কুড়িগ্রাম পৌরবাজারস্থ টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের কার্যালয়ের সামনে দ্বীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি ইউনুছ আলী, ঢাকা পোষ্টের জুয়েল রানা এবং দুজন ক্যামেরা পার্সনকে লাঞ্ছিত করে।
পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম জানান, বিকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। রোববার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে কুড়িগ্রাম সদরে কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোড়ে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য পুলিশ ও বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *