খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের চাকিনীয়া গ্রামের বগুড়া পাড়ায় সাড়ে ৭ বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে খানসামা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন৷ যার মামলা নং -১১। ঘটনার পর ধর্ষণের চেষ্টাকারী একই এলাকার জহুরুল ইসলাম (৪০) পলাতক ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার আদালতে জামিনের জন্য তিনি আত্মসমর্পণ করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় মামলার বাদি ও স্বাক্ষীরা ভয়-ভীতিতে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মামলা ও ভুত্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জুন শনিবার শিশুটি প্রতিবেশী আতিফা খাতুনকে সাথে নিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামে বড় বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাস্তার পাশে লিচু বাগানে লুকিয়ে থাকা একই এলাকার মৃত সামছুল হক ফকিরের ছেলে জহুরুল ইসলাম (৪০) শিশুটিকে দেখতে পেয়ে মুখ চেপে ধরে পাটক্ষেতে নিয়ে যায়। এরপর জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে শিশুটির সাথে থাকা আতিফা খাতুন চিৎকার করে। এরপর এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসায় ধর্ষণের চেষ্টাকারী জহুরুল ইসলাম পালিয়ে যায়। এরপর শিশুটিকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়ে সুস্থ হওয়ার পর থানায় মামলা করে।
ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বলেন, মামলা করার পর ধর্ষণ চেষ্টাকারী জহুরুল ইসলামের শ্বশুর সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম মাস্টারের প্রভাবে স্বাক্ষীরা ভয়ে দিন পার করছে। তিনি তাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসতেছে। এজন্য স্বাক্ষীরা আর স্বাক্ষী দিতে যেতে চাচ্ছে না। আমিও পরিবার নিয়ে ভয়-ভীতিতে আছি।
এলাকাবাসী জানান, এই জহুরুল একজন নারী লোভী ও দুশ্চরিত্র লোক। এর আগে ৭/৮ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করার ঘটনা ঘটেছে। একই এলাকার রাজ্জাক আলীর স্ত্রী ইসমাতন খাতুনকে জোর পূর্বক ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছিল। পরে তার শ্বশুরের প্রভাবে মিমাংসা করতে বাধ্য করা হয়। এলাকার নারী ও মেয়েরা তার ভয়ে চলাফেরা করে। এজন্য তার কঠিন শাস্তি দাবি করেন এলাকাবাসী।
ধর্ষণ চেষ্টাকারীর শ্বশুর সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ঘটনাটি জানার পর আমি পারিবারিকভাবে বসে মিমাংসা করার জন্য বলেছিলাম। কাউকে কোন ভয়-ভীতি বা হুমকি দেয় নি।
এ বিষয়ে খানসামা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই কাজল বলেন, এ ঘটনায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯ (৪) (খ) ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করার অপরাধে মামলা নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে শিশুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে জবানবন্দি দিয়েছে। বর্তমানে ধর্ষণের চেষ্টাকারী জহুরুল জেল হাজতে রয়েছে। ঘটনাটি আরো তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট পাঠানো হবে।