খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের খানসামায় পুত্রবধুর অমানবিক নির্যাতনে শ্বাশুড়ী গুরুতর আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৬ নং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের পশ্চি হাসিমপুর গ্রামের বাবুপাড়ায়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নির্যাতিত ৬৫ বছরের বৃদ্ধা বাবুপাড়ার অন্তর্গত পন্ডিত পাড়ার মৃত অতুল চন্দ্রের স্ত্রী। বিধবার ৫ ছেলে ও এক মেয়ে। ৩য় ছেলে হরিপদ জানান, ৭ মে বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে প্রতিবেশীর টিভি নেওয়াকে কেন্দ্র করে পুত্রবধু ছবি রানী উসকানিমূলক কথা বললে তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। এতে বৃদ্ধ শ্বাশুড়ী তার পুত্রবধুকে শাসন করে চুপ থাকতে বলে। শ্বাশুড়ীর কথায় পুত্রবধু ছবি রানী ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বাশুড়ীর ওপর চড়াও হয় এবং বাঁশের বাতা দিয়ে নির্মম ভাবে তার শ্বাশুড়ীকে প্রহার শুরু করে। বৃদ্ধার ছোট ছেলে বীরেন আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুত্রবধু ছবি মারমুখি থাকায় এবং মহিলা হওয়ার কারনে সে মার আটকাতে ব্যর্থ হয়। অপরদিকে ছবি রানীর স্বামী, বৃদ্ধার ২য় ছেলে পরেশ চন্দ্র (৩৪) ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও সে কোন শাসন-বারন, কিংবা বাধা প্রদান করেনি। বরং সে তার বউকে উৎসাহ দেয় আরো মারতে। এক পর্যায়ে ছবি রানী তার শ্বাশুড়ীর চোখে সজোরে ঘুষি মারে।
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বৃদ্ধার ৩য় বাকি ছেলেরা সুষ্ঠ বিচারের জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তির কাছে ছুটছে। ৭ মে রাতে বৃদ্ধার ছেলে হরিপদ জানান, ইতিমধ্যে ওয়ার্ড মেম্বারকে জানানো হয়েছে।
অপরদিকে একই গ্রামে পিতৃপরিবারে পাষন্ড স্বামী তার স্ত্রীকে পিটিয়ে জখম করেছে। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, চিরিরবন্দর উপজেলার ৩নং ফতেজংপুর ইউনিয়নের জোতরঘু গ্রামের মৃত মফিজউদ্দীনের ছেলে তৈয়ব আলী (৩৫) এর সাথে ১০ বছর পূর্বে খানসামা উপজেলার ৬নং গোয়ালডিহি ইউনিয়নের পশ্চিম হাসিমপুর গ্রামের হেদায়েতুল্লার ২য় মেয়ে সুমি বেগমের বিয়ে হয়। ১০ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের ১ ছেলে ও মেয়ে। তৈয়ব আলীর শ্বশুড় মো: হেদায়েতুল্লা জানান, মেয়ে ও জামাই এক মাস পূর্বে তার বাড়ীতে আসে। ঘটনার দিন তার জামাই মেয়ের কাছে টাকা চায়। মেয়ে অকারনে টাকা দিতে অস্বীকার করলে তৈয়ব মারধর শুরু করে। তিনি আরো জানান যে, পাষন্ড তৈয়ব মাঝে মাঝে জুয়া খেলায় এবং প্রায়ই তার মেয়েকে মারধর করে। কিন্তু সে গরীব হওয়ায় এবং মেয়ে জামাইয়ের সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য মুখ বুঁজে সব সহ্য করে গেছেন। ৮ মে বৃহস্পতিবার সুমির জবান বন্দী নিতে গেলে সে জানায়, ঘটনার দিন গত ৪ জুন ইফতারের পর খরগোশ বাচ্চা খাঁচায় ভরা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে তার স্বামী তাকে প্রথমে লাকরি পরে লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করে। প্রতিবেশী মহিলারা বাঁচাতে আসলে তৈয়বের মারমুখি আচরনে ব্যর্থ হয়। বেদম প্রহারের ফলে নির্যাতিতা সুমির মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এরপর পরিবারের অন্য সদস্যদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে পাষন্ড স্বামী পালিয়ে নিজ বাড়ী চিরিরবন্দরের ঠাকুরের হাটে চলে যায়।
এরপর সুমি বেগমকে তাড়াতাড়ি খানসামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাকেরহাটে রাত ৯ টায় ভর্তি করা হয়। ৭ জুন বিকেল তিনটায় সুমি সুস্থ্য হলে তাকে দায়িত্বরত চিকিৎসক হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়।