মোঃ শেখ শহীদুল্লাহ্ আল আজাদ. স্টাফ রিপোর্টার
খুলনা বিভাগের উপকূলীয় এলাকা সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় উপকূলজুড়ে সুপার সাইক্লোন ‘ইয়াস’ আগমনী বার্তায় আতঙ্ক গ্রস্থ হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার মানুষ। আজ ২৬শে মে সকাল থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় এলাকার নদী খোলপেটুয়া, কপোতাক্ষ, মালঞ্চ, চুনা, কালিন্দি, মাদার নদী সহ সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, এ ছাড়াও আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার ঘোলা গ্রামের নদীর পানি প্লাবিত হয়ে গ্রামের ভেতর প্রবেশ করা সহ সকল মাছের ঘের তলিয়ে গেছে বলে মুঠোফোনে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিভিন্ন স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ (ওয়াবদা বেড়িবাঁধ) ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। আবার কোথাও কোথাও বাঁধে ভাঙ্গন ধরেছে। বাঁধ সংলগ্ন এলাকার বসতিরা আতঙ্কে অন্যত্র সরে যাচ্ছে।
এদিকে উপকূলীয় এলাকার আকাশ সকাল থেকে গুমোট আকার ধারণ করে মাঝে মাঝে বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া বইছে। উপজেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, পুলিশ, বিজিবি, সিপিপি সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে মানুষদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। শ্যামনগর উপজেলাকে ঘিরে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড ৫ ও ১৫ নম্বার পোল্ডারের ৪৩ টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে উপকূল রক্ষা বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে এবং ঝুকিপূর্ণ এলাকাগুলো স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রুত মেরামতের কাজ অব্যহত রয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে ৩ নম্বর দুরবর্তী হুসায়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এটি ধীরগতিতে উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ২৬ মার্চ ভোর নাগাদ উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আছড়ে পড়তে পারে। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, ‘সুন্দরবন সংলগ্ন নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ার ভাটার তুলনায় পানি ৩ থেকে ৪ ফিট বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঢেউও বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। সেগুলো মেরামতের কাজ চলছে এবং জিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন ও উপজেরা নির্বাহী অফিসার আ ন ম আবুজর গিফারী বিভিন্ন ঝুকি পূর্ণ স্থান পরিদর্শন পূর্বক জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। আমাদের চার হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। এছাড়া পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বিজিবি, গ্রাম পুলিশ, সিপিপি সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার কাজ করছে।
ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকার মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে এবং হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সাইক্লোন সেল্টার গুলি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ১২টি মেডিক্যাল টিম ও উপজেলায় একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে যে কোন তথ্যের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আতঙ্কগ্রস্থ সকল মানুষকে সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।