কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
ব্রহ্মপুত্রে নাব্য সংকটের কারণে কুড়িগ্রামের চিলমারীর রমনা নৌবন্দর থেকে রৌমারী, রাজীবপুর ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জনৌপথে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নৌপথ ব্যহারকারীরা। নৌপথ স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব ইজাদারের। ড্রেজিংয়ের খরচ মাঝিদের কাছ থেকে নিয়ে নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ড্রেজিং করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ঊঠেছে।
চিলমারী ঘাট থেকে রাজীবপুরের মোহনগঞ্জ ও কোদালকাটি ইউনিয়নসহ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ নৌরুট ও চিলমারীর অষ্টমীরচর ইউনিয়নের কয়েকটি চরাঞ্চলে যাওয়ার এটি একমাত্র নৌপথ। এই নৌপথের প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে নাব্য সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্রের বিশাল এলাকা জুড়ে চর জেগে উঠেছে। ফলে নৌযান চলাচলের পথ পরিবর্তনের পাশাপাশি বেড়েছে দূরত্বও। চিলমারী নৌবন্দর থেকে উত্তরে টোনগ্রাম-সোনালীপাড়া সংলগ্ন নৌপথে নদের পানি কমে গিয়ে ডুবো চর জাগায় উলিপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নসহ রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলায় চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ইজারাদাররা শ্যালো চালিত ড্রেজার দিয়ে নাব্য সংকট সমাধানের চেষ্টা করলেও তাতে স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। জোরগাছ হাটে যাত্রী ও মালামালসহ গরু পরিবহন করেন মাঝি আজাদ। তিনি বলেন, জোরগাছ হাট থেকে দক্ষিণে নদের মনতোলার চর এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার জায়গায় পানি কমে গেছে। ওই জায়গায় যাত্রীরা নেমে নৌকা ঠেলে পাড় না করলে চলাচল করা যাচ্ছে না। ফলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কামারজানি, পাঁচপীর, চর কাপাশিয়া, রাজীবপুরের উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের বড়বেড়, নাওশালা, কের্তনটারি, মোল্লারচর, কোদালকাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চল, চর রাজীবপুর, কড়াই বরিশাল,শাখাহাতি, গাজীরপাড়াসহ চিলমারী উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরাঞ্চলে যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ঘাট ইজারাদারদের এ বিষয়ে বারবার বলা হলেও তারা নাব্য সংকট সমাধানে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অথচ এই রুটে হাটের দিনসহ দৈনিক প্রায় অর্ধ শতাধিক নৌকা চলাচল করে। এছাড়া চিলমারী ঘাটের উত্তরে রৌমারী ও রাজীবপুরের কিছু অংশসহ উলিপুরের সাহেবের আলগা, মেকুরের আলগা, জাহাজের চরসহ বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চলের নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিলমারী ঘাটের একাধিক মাঝি জানান, ঘাটের ইজারাদার রমনা ঘাটের উত্তরের মূল চ্যানেলটি শ্যালো চালিত ড্রেজার দিয়ে খননের ব্যবস্থা নিয়েছে। এজন্য তারা মাঝিদের কাছ থেকে ড্রেজিংয়ের খরচ নিচ্ছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি।
এ বিষয়ে চিলমারী নৌঘাট ইজারাদারের প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম লিপু বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও নাব্য সংকটে নিরসনে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ব্যবসার স্বার্থে আমরা ড্রেজিং করে সাময়িকভাবে নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।
মাঝিদের কাছ থেকে কেন ড্রেজিংয়ের খরচ নিচ্ছেন জানতে চাইলে লিপু বলেন, ‘সব নৌকার কাছে নয়, শুধু মালামাল পরিবহনে ব্যবহৃত নৌকা থেকে সামান্য খরচ নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকার বীরবিক্রম বলেন, ড্রেজিংয়ের খরচ নৌকার মাঝিদের কাছে নেওয়ার কথা নয়। এটা ইজারাদাররা সমন্বয় করে নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখবেন। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবো।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলামকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।