ফারহানা আক্তার,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার করিমপুর গ্রামের এক বর্গা চাষীর ৪২ শতক জমিতে লাগানো লাউ গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, শনিবার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাতের কোনও এক সময় বর্গা চাষীর সিদ্দিকুর রহমান ৪২ শতক জমির বেড়ে ওঠা লাউ গাছ কেটে দিয়েছে।

সিদ্দিকুর রহমান জানান,অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ১০ বিঘা জায়গায় এলাকায় একটা প্রজেক্ট করেছি, ওই গ্রামের রেজাউলের কাছ থেকে ইরি বুড়ো ধান মাড়াইয়ের পর ৪২ শতক জমি এক বছরের জন্য ৫০ হাজার টাকায় বর্গা নেন। উঁচু জমি বলে তিনি সেই জমিতে জুন মাসের প্রথম দিকে লাউ গাছের বীজ রপন করেন। এরপর গাছ বড় হতে থাকে। নিজেই পরিচর্যা করেন। গাছগুলোও তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে ফুলও এসেছে। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার বিকালে চাষী সিদ্দিকুর রহমান তার লাউ ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করে সন্ধ্যায় বাড়িতে যান।

তিনি জানান, শনিবার (২৪ আগস্ট)সকালে ক্ষেতে গিয়ে দেখতে পান, লাউ গাছের পাতাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। বাঁশের মাচার নিচে তাকিয়ে তিনি দেখেন সব গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে। রাতের আঁধারে কে বা কারা তার ক্ষেতের লাউ গাছগুলো কেটে ফেলেছে।

আক্ষেপ করে সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে দরিদ্রতার মাঝে বড় হয়েছি। কাউকে তুই বলেও গালিগালাছ করিনি। মনে করি, আমার কোনও শত্রু নেই। কিন্তু আজ সেই ভাবনা আমাকে অনেক দূরে নিয়ে গেছে। সংসারে ছেলে-মেয়েদের মুখে দুবেলা খবার দেন৷ অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে আসছি। আজ সেটিও তাদের সহ্য হলো না। কয়েকদিন পরই লাউ ধরতো গাছে। আমার সব আশা আজ ভেস্তে গেল। ভেবেছিলাম, লাউ বিক্রি করে একটি গাভী কিনবো, তাও হলো না। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশায় থানায় অভিযোগ করেছি।’

প্রতিবেশী খুলুন সরদার বলেন, ‘একজনের সঙ্গে আরেক জনের শত্রুতা থাকতেই পারে, তবে ফসলের সঙ্গে কেন? এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।’

আরেক প্রতিবেশী দোলুন আক্তার বলেন, ‘যত বড় অপরাধ হোক না কেন- কারও ফসল কেটে ফেলা ঠিক হয়নি। যারা কেটে ফেলেছে তারা সিদ্দিকুর রহমানের পেটে লাথি মেরেছে, তার পরিবারের গলায় পা তুলে দিয়েছে। ফসল কাটার বিচার হওয়া দরকার।’

কালাই থানার ওসি ওয়াসীম আল বারী বলেন, ‘কৃষক সিদ্দিকুর রহমান একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *