নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
নাগেশ্বরীতে নিলুরখামার গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। অন্যান্য বছরের মত এবারেও মঙ্গলবার সকালে শহীদদের স্মরণে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ উদ্যোগ “শেকড়” নিলুরখামার বধ্যভুমি ও গণকবর স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ গণকবরে পুষ্পস্তবক ও শ্রদ্ধা জানিয়ে দিবসটি পালন করে।
এ সময় শেকড় সভাপতি মনোয়ার হোসেন সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সভাপতি লিটন চৌধুরী, নিলুরখামার বধ্যভুমি ও গণকবর স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ এর সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহিম, শহীদ পরিবারের সদস্য শমসের আলী, আব্দুল জলিল, আমিনুল ইসলাম, আবুল কাশেম প্রমুখ।
উল্লেখ্যঃ ১৯৭১ সালের ১৬ নভেম্বর পাক বাহিনী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের আলেপেরতেপথি, চরুয়াটারী, কাইটটারী, সূর্যেরকুটি, সাতানি, ব্যাপারীহাটসহ কয়েকটি গ্রামে অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে মানুষ। আশ্রয় নেয় নিলুরখামার গ্রামে। এক সময় পাক হানাদাররা ওই গ্রামটিকে তিনদিক থেকে ঘিরে নির্বিচারে গুলি ও বাড়ি-ঘরে অগ্নি সংযোগ করে। সেখানেই আগুনে পুড়ে মারা যায় আপর আলী, বাচ্চানী খাতুন, মইনুদ্দিন মুন্সী, আব্দুস সালাম মুন্সী, হাজেরা খাতুন, আজিজুর রহমান। এছাড়াও বেয়নেট খুঁচিয়ে ও গুলি করে ৭৯ জন নিরিহ নিরাপরাধ মানুষকে তারা হত্যা করে। হানাদাররা চলে গেলে আতংকিত মানুষরা ফিরে এসে লাশগুলোকে একত্রিত করে গ্রামের একদিকে মাটি চাপা দেয়। এটিই উপজেলার সর্ববৃহৎ ও জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণকবর।
অপরদিকে ওই দিনে ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট অধিনায়ক ক্যাপ্টেন আতাউল্লাহ খাঁনের নেতৃত্বে রাজাকার ও পাকবাহিনীর একটি দল হাসনাবাদ ইউনিয়নের মনিয়ারহাট, শ্রীপুর, হাজিরহাট, টালানাপা গ্রামে ঘর-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায় ২৯ জন। মনিয়ার হাটের আগু মিয়াসহ ৩ জনকে তারা হাত পা বেঁধে আগুনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে। এ নৃশংস হত্যাকান্ডের স্মৃতি আজও ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী।