আব্দুল সাত্তার চট্টগ্রাম
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে দূর্ঘটনা আসন্ন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণার প্রেক্ষিতে সমগ্র দেশে সৃষ্ট আনন্দ উল্লাসকে অবদমিত করতে নাশকতা কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি দেশের ভাবমূর্তি এবং রপ্তানি বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্থ করাই উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ার পর এবং পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করার পর দেশে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা হচ্ছে। কোন কোন জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়েছে। সেটির ধারাবাহিকতায় দেশবাসীর দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাবার জন্য সীতাকুণ্ডের দূর্ঘটনায় কোনো নাশকতা আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।
সোমবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে দগ্ধদের দেখতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। এসময় চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান, অধ্যক্ষ ডা. শাহেনা আক্তার, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান, সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কোনো কোনো টেলিভিশন এবং পত্রিকায় রিপোর্ট করা হয়েছে, এই কনটেইনার ডিপোটি একজন আওয়ামী লীগ নেতার। আমি খোঁজ খবর নিলাম, আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমানের এই ডিপোতে মালিকানা মাত্র পাঁচ শতাংশ। ৯৫ শতাংশের কথা না বলে পাঁচ শতাংশের মালিককে এটির মালিক দেখিয়ে যারা এই কাজটি করেছেন, এটিকে আওয়ামী লীগ নেতার ডিপো বানানোর যারা চেষ্টা করেছেন, সেই সাংবাদিকতা টা সঠিক হয়নি। অপসাংবাদিকতা হয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনা ঘটার পরপরই প্রধানমন্ত্রী প্রশাসন এবং আমাদের দলের সমস্ত পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যা কিছু করা প্রয়োজন সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে। সেই নির্দেশ মোতাবেক সিভিল প্রশাসন এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো তারা সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, আমাদের দলের সমস্ত পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহত এবং নিহতদের উদ্ধার করা থেকে শুরু করে সমস্ত কাজে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা শুরু থেকে ছিল, এখনো আছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এজন্য যাদের রক্ত প্রয়োজন তাদের রক্তের কোন অভাব হয়নি। যে বডি ফ্লুইড দরকার সেটিরও কোন অভাব হয়নি। এত বড় একটা ক্যাজুয়ালিটিতে এগুলো অভাব হতে পারত। কিন্তু সবাই এগিয়ে এসেছে বিদায় অভাবটি হয়নি।
সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সরকার কোন উন্নতি করতে পারেনি সেটারই পরিণতি ঘটেছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইদানিংকালের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে, উনার একটু চিকিৎসার দরকার আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বজ্ঞানে কথা বলেছেন কিনা আমি জানি না, নাকি উনি আধাচেতন অবস্থায় কথা বলেছেন। যেটা গয়েশ্বর বাবু বলেন, সেরকম বলেছেন কিনাও আমি জানিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যদি ভালো না হতো, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক নাম্বার হতোনা। সমগ্র পৃথিবীতে এক নাম্বার হতোনা। এই দুর্ঘটনার পর স্বাস্থ্যকর্মীরা, ডাক্তাররা এবং ব্যবস্থাপনার সাথে যারা যুক্ত তারা যেভাবে এগিয়ে এসেছে, এটি অভাবনীয়।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব না দেখে ঠাকুরগাঁও বসে মুখস্থ বক্তব্য দিয়ে দিলেন, কই তাদের তো কোনো নেতাকর্মী ছুটে আসেনি এখানে। এখানে রক্ত দেওয়ার জন্য কিংবা ফ্লুইড দেওয়ার জন্য তাদের কোন নেতাকর্মী দেখা যায়না। সবতো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই ছুটে এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *