ফারহানা আক্তার,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ইট ভাটার শ্রমিকের বুদ্ধিমত্তায় ভয়াবহ ট্রেন দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল পঞ্চগড়গামী পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি। সেই সাথে বেঁচে গেলো ট্রেনে থাকা শত শত যাত্রীর প্রাণ। ঘটনাটি ঘটেছে আজ শক্রবার সকালে পাঁচবিবি-বাগজানা রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী কোঁকতারা নামক স্থানে। ট্রেন দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষাকারী যুবক নাজির হোসেন(৩৫) উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের কোঁকতারা গ্রামের মৃত আফসার আলীর পুত্র । সে আটাপাড়া এনামুল মেম্বারের ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করত বলে জানা গেছে।

নাজির হোসেন জানায়, সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে রেল লাইন দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় রেল লাইনের ফিস প্লেট খুলে পড়ে গেছে এবং রেল লাইনের অনেকটা অংশ ভাঁঙ্গা দেখতে পান। এসময় সে দেখেন ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড় গামী আন্তঃনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (৭৯৩ নং) ট্রেনটি পাঁচবিবির দিক থেকে দ্রæত ছুটে আসছে । অবস্থা বেগতিক দেখে রেল লাইনের পাশে একটি লাল শপিং ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। সে দ্রæত ব্যাগটি ছিড়ে বাঁশের কঞ্চিতে বেঁধে ট্রেন থামানের জন্য উড়াতে থাকে। কিন্তু ট্রেনের গতি কমতে না থাকায় তার ঘাড়ে থাকা লাল গামছা দিয়ে রেল লাইনের উপড় দাড়িয়ে ঘুরাতে ও চিৎকার দিতে থাকেন। তার চিৎকার শুনে পাশের বাড়ীর শহিদুল ইসলামের ছেলে গোলজার দৌড়ে এসে লাল গামছাটি উচু করে ধরেন। এমতবস্থায় ট্রেন চালক বিপদের আংশকা আঁচ করতে পেরে ট্রেনের গতি কমিয়ে দূর্ঘটনা কবলিত রেল লাইনের ৫-৬ গজ দূরে এসে দাঁড়িয়ে যায়। ট্রেন থামার পর চালক ও যাত্রীরা নেমে রেল লাইনের ভাঁঙ্গা দেখে তাকে ধন্যবাদ দেন।
কোঁকতাড়া গ্রামের কেরামত আলী বলেন, সকাল বেলা রেলের ব্রেকের উচ্চ শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বের হই। এসে দেখি তারা রেল লাইনের উপর গামছা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

স্থানীয় বালিঘাটা ইউপি সদস্য আবু হাসান বলেন, নাজির আমার চাচাত ভাই। তারমত একটি অশিক্ষিত ছেলে বৃদ্ধি খাটিয়ে শত শত মানুষের প্রাণ রক্ষা করল সেটা ভেবে গর্বে বুকটা ভরে গেছে।
পাঁচবিবি রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আব্দুল আওয়ালকে জিঞ্জাসা করলে তিনি জানান, রেল লাইনের ফেঁটে যাওয়ার কথা স্থানীয়রা আমাকে জানালে, আমি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনা স্থলে রেললাইন মেরামতের জন্য লোক পাঠাই। ফেঁটে যাওয়া রেল লাইন মেরামতের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *