কলকাতা প্রতিনিধি
রবীন্দ্র সদন সভাগৃহে বাসভূমি সেরা লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার পেলেন উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ। পুরস্কার তুলে দেন ইতিহাসবিদ খাজিম আহমেদ, বাসভূমি পত্রিকার সম্পাদক অরূপ চন্দ্র ও সাহিত্যিক আনন্দ মার্জিত।
১ ডিসেম্বর ২০২৪, ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরে রবীন্দ্র সদন সভাগৃহে প্রতিবছরের মতো এবারও বসেছিল বাসভূমি উৎসব তথা বাসভূমি পুরস্কার প্রদানের আসর। ২০০৮ সালে শুরু হয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৭ বছরে বাসভূমি পুরস্কার মুর্শিদাবাদ সীমানা পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর-পূর্ব ও মধ্য ভারত এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রেও একটি পরিচিত সাহিত্য পুরস্কার। এযাবৎ ৮৭ জন কবি সাহিত্যিক লেখক সমাজকর্মী চিত্রশিল্পী নাট্যকার আবৃত্তিকার সংগীতশিল্পী এই পুরস্কার পেয়েছেন। বাসভূমি পত্রিকার সম্পাদক অরূপ চন্দ্র জানালেন—২০০৮ সালে শুরু হয়ে প্রতি বছর সুনির্বাচিত জ্ঞানীগুণী পণ্ডিত ব্যক্তি যাঁরা সমাজে শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি ভাষা কৃষ্টির বিকাশে এবং চর্চায় বিশেষ নিদর্শন রাখছেন তাঁদের মধ্যে থেকেই আজীবন নিরবচ্ছিন্ন কাজের জন্য “সিসিএআই-বাসভূমি জীবনকৃতি পুরস্কার” প্রদান করা হয়; এবং যারা প্রভূত সাহিত্যকর্মের সঙ্গে যুক্ত থেকে সমাজে বিশেষ নিদর্শন সৃষ্টি করছেন তাদের “বাসভূমি সাহিত্য সম্মাননা” প্রদান করা হয়। একই সাথে, লিটল ম্যাগাজিন-যা কিনা সাহিত্যের ধাত্রীভূমি এবং বর্তমানের অসংখ্য স্বনামধন্য সাহিত্যিকের গৌরবের উৎসভূমি, সেই লিটল ম্যাগাজিন ও তার সম্পাদকদের সম্মাননা প্রদান করা হয় “বাসভূমি সেরা বাংলা লিটিল ম্যাগাজিন পুরস্কার” শিরোনামে।”
২০২৪ সালে, বাসভূমি জীবন কৃতি সম্মাননা ও পুরস্কারে যারা নির্বাচিত হয়েছিলেন সেই তালিকাটি চমকপ্রদ। বর্তমান বঙ্গের অন্যতম শক্তিশালী কবি তৈমুর খান; মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানা ছাড়িয়ে যার চিত্রকর্ম সারা বাংলায় এক বিশেষ প্রভাব সৃষ্টি করছে সেই চিত্রশিল্পী কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত এবং আজীবন যিনি নিজেকে ইতিহাস চর্চায় নিয়োজিত রাখলেন সেই ইতিহাস গবেষক প্রকাশ দাস বিশ্বাস—জীবনকৃতি পুরস্কার গ্রহণ করলেন আজকের মঞ্চে।
বাসভূমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেওয়া হল সম্প্রীতি এবং লোকসংস্কৃতি নিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলা প্রাবন্ধিক সাংবাদিক চন্দ্রপ্রকাশ সরকারের হাতে; একই সাথে লোকসংস্কৃতি গবেষক ড. গদাধর দে এই পুরস্কারে ভূষিত হলেন। বিশেষ উল্লেখ্য, গ্রাম্য গৃহবধূ হয়েও নিরন্তর সাহিত্যের চর্চাকে এবং সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করে চলা কবি ও অরুণোদয় পত্রিকা সম্পাদক দেবী রাহা মিত্র এবছর বাসভূমি সাহিত্য সম্মাননা পেলেন; যিনি বাসভূমি সম্মাননা তালিকায় এই প্রথম মহিলা প্রাপক।
পশ্চিমবঙ্গের লিটিল ম্যাগাজিন আন্দোলনের দুই যুগপুরুষ কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরী ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সন্দীপ দত্ত এবং সাহিত্যের ইয়ারবুক স্রষ্টা জাহিরুল হাসান এর আগে জীবনকৃতি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনে যুক্ত বহু সম্পাদক যেমন আসামের প্রবাহ পত্রিকা, ত্রিপুরার সন্ধিক্ষণ, আন্দামানের বাকপ্রতিমা, ঝাড়খণ্ডের প্রৈতি, সুতাপা এবং আরো পত্রিকা তাদের অবদানের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন। ২০২৪ শে যারা নির্বাচিত তারা হলেন— ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের পত্রিকা ‘শিল্পে অনন্যা’, যার সম্পাদক ড. দীপক কুমার সেন; ভাঙড় থানার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে প্রকাশিত পত্রিকা ‘উদার আকাশ’ সম্পাদক ফারুক আহমেদ; নদীয়া থেকে প্রকাশিত ‘বনামি’, সম্পাদক দিলীপ মজুমদার এবং ৫০ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে চলা পত্রিকা ‘অজয়’, সম্পাদক তারকেশ্বর চট্টরাজ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ বন্ধু-বান্ধবীদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে ২০০২ সালে প্রথম পত্রিকা প্রকাশ করেন।
বেলা দেড়টায় অনুষ্ঠান শুরু হয় জন্মশতবর্ষে পৌঁছনো ভারত বিখ্যাত সুরকার সলিল চৌধুরীর গান দিয়ে। পরিবেশন করেন শ্রীমতী সঞ্চিতা রায়, তবলার সংগত করেন জেলার খ্যাতনামা তবলা বাদন শিল্পী বিশ্বজিৎ মোহান্ত। এরপরে মুর্শিদাবাদ জেলার অন্যতম খ্যাতনামা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র “অমৃতকুম্ভ”-র ১৫ জন আবৃত্তিকার একযোগে পরিবেশন করেন এক অভাবনীয় উপস্থাপনা শঙ্খ ঘোষের রচনা আশ্রয়ে “কবিতা আজ শেষের রণসাজ”; পরিচালনা সুকুমার ঘোষ। তাদের উপস্থাপনা দর্শক মনে গভীর দাগ কাটে। অমৃতকুম্ভর পরিচালক সৌমেন চট্টোপাধ্যায় সহ প্রত্যেক আবৃত্তি শিল্পীর হাতে বাসভূমি স্মারক উপহার তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে জেলার দুই খ্যাতনামা সংগীত শিল্পী গার্গী ভট্টাচার্য চক্রবর্তী ও শ্রাবণী সিংহরায়ের যৌথ পরিবেশনা শুরু হয় নিধুবাবুর টপ্পা দিয়ে, এবং তাঁরা ধ্রুপদী মূর্ছনার এক অভাবনীয় পরিবেশনায় দর্শকমন্ডলীকে বিমোহিত করে তোলেন। এরপরেই আসে লোকসংগীত এর একটি সম্পূর্ণ অন্য ধরনের উপস্থাপনা যেখানে বাংলার লোকসংগীতকে আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত করেন তরুণ লোকসংগীত গায়ক দেবাশিস দেবনাথ; তাঁকে যোগ্য সংগত করেন সুমন্ত্র সারথী রায়, অমোঘ চৌধুরী ও তাপস কর্মকার।
এই উৎসব মঞ্চে বাসভূমি ৪৫বর্ষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়; এছাড়াও অরূপ চন্দ্র লিখিত মুর্শিদাবাদের “নারী”, “ব্রহ্মপুর থেকে বহরমপুর শহরের ইতিকথা” এবং “দ্য থিওরি অফ আর্ট” নামে আরো তিনটি বই প্রকাশিত হয়। বইগুলি প্রকাশ করেন অধ্যাপক মানবেন্দ্রনাথ সাহা, কবি ও আবৃত্তিকার সাবিনা সৈয়দ, কবি তাপস সরখেল, কবি আব্দুস সালাম, সমাজকর্মী ও শিক্ষিকা কাবেরী বিশ্বাস, শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক কিশোর কুমার দাস, অধ্যাপক দুলাল কুমার বসু, কবি শম্ভু ভট্টাচার্য, মুর্শিদাবাদ জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় শিল্পী পঞ্চানন চক্রবর্তী, শিল্পী চন্দন দাস ও শিল্পী মিজানুর খান।
অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন বর্ষিয়ান প্রাবন্ধিক ও গবেষক দুলাল কুমার বসু, প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক, সিনেমা বিষয়ে গবেষক সাহিত্যিক এবং শ্রাবণ ঠিক মানবেন্দ্রনাথ সাহা। তারা তাদের বক্তব্যে বাসভূমি পুরস্কারের গুরুত্ব এবং বাসভূমি পত্রিকার এই নিরন্তর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকি বীরভূম ও নদিয়া থেকেও বিভিন্ন মানুষ এসেছিলেন আজকের এই সভায়। কবি মনিরুদ্দিন খান, ইতিহাস গবেষক রমাপ্রসাদ ভাস্কর, কবি সন্দীপ বিশ্বাস, সমাজ ও ইতিহাস গবেষক খাজিম আহমেদ, কবি ও সম্পাদক সমীর ঘোষ, কবি ও প্রাবন্ধিক কৌশিক বড়াল, অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক আবুল হাসনত, ছোট গল্পকার কুনাল কান্তি দে, লোকসংস্কৃতি গবেষক সুশান্ত বিশ্বাস, কবি আনন্দ মার্জিত, শিক্ষিকা ও লেখিকা ওফিলিয়া চন্দ্র দত্ত, কবি ও সম্পাদক গোলাম কাদের, আবৃত্তিকার শ্রীমন্ত ভদ্র, কবি বিপ্লব ভট্টাচার্য, কবি প্রভাত কুমার মন্ডল, কবি কালিপদ হাজরা, কবি গোপাল বসাক, কবি হৈমন্তী বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ।
৭৪ বছর বয়সেও এই সাড়ে তিন ঘন্টার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাসভূমি সম্পাদক অরূপ চন্দ্র নিজেই।
ভাঙড়ের ভূমিপুত্র কবি ফারুক আহমেদ সম্পাদক-প্রকাশক উদার আকাশ। উপেক্ষিত, অনগ্রসর শ্রেণির অভাব-অভিযোগ আদায়ে, তাদের প্রাপ্য অধিকার পাইয়ে দিতে, সমাজের কল্যাণে জাতিসত্তার মর্যাদার অন্বেষক হিসেবে কাজ করছেন ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার সম্পাদক ও ‘উদার আকাশ’ প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার তথা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষক ফারুক আহমেদ। অসংখ্য উজ্জ্বল নক্ষত্রের মধ্যে উজ্জ্বল এক জ্যোতিষ্ক ফারুক আহমেদ। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই এই বঙ্গের নয়া চিন্তার অন্যতম প্রতিনিধি তিনি। সমাজমনস্কতার ক্ষেত্রে পরিচিত হয়ে উঠেছেন দুরন্ত গতিতে। নতুন সমাজ ভাবনার মূল্যবোধকে যাঁরা সাহিত্যের পাতায় পাতায় সাজিয়ে দিয়ে সৃষ্টি করেন এক বিরল ভাবনার, ফারুক আহমেদ তাঁদের অন্যতম। সাহিত্য সচেতন মানুষের কাছে ‘উদার আকাশ’ ইতিমধ্যেই দাগ কেটেছে। মানুষের জন্য বাঁচার আকাশ দেখাই সাহিত্যিক ফারুক আহমেদ-এর স্বপ্ন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নাটাপুকুর গ্রামে ১৯৮৩ সালের ৭ মার্চ ফারুক আহমেদ জন্মগ্রহণ করেন। নাটাপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক পড়াশোনার হাতে খড়ি। এরপর ঘটকপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে মাধ্যমিক পাশ করেন। ভাঙড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান শাখায়) পাশ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত সুরেন্দ্রনাথ দিবা কলেজ থেকে স্নাতক হন। এম. এস. বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব লাইব্রেরি সায়েন্সও উত্তীর্ণ হন প্রথম বিভাগে। এরপর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স করেন। তারপর ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (প্রকাশনা ও পরীক্ষাসমূহের) পদে কর্মরত থাকার সময়ে ২০১৬ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক আহমেদ ইতিহাস বিভাগে পিএইচ ডি ডিগ্রির কাজ শুরু করেন। ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক অলককুমার ঘোষকে গাইড হিসাবে পান ফারুক আহমেদ। তাঁর গবেষণার বিষয়, ‛স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে মুসলিম পরিচালিত মিশন স্কুলের অবদান’। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন অধ্যাপক ফারুক আহমেদকে স্নেহ করেন এবং তাঁর কাজে উৎসাহ দেন। তাঁদের মধ্যে বিশেষ করে উল্লেখ করতে হয় কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক (ড.) গৌতম পাল-এর কথা। গ্রামের অতি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন ফারুক আহমেদ। বংশের মধ্যে তিনিই প্রথম পিএইচ ডি গবেষক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন স্বনামধন্য কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিপূর্বে তাঁদের বংশের কেউ পিএইচ ডিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাননি। ফারুক আহমেদের সুযোগ্য সহধর্মিণী মৌসুমী বিশ্বাসও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে এডুকেশন বিভাগে পিএইচ ডি গবেষক হিসেবে কাজ করছেন।
ফারুক আহমেদ বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের অফিস কোঅর্ডিনেটর পদে কর্মরত আছেন।
ফারুক আহমেদ ভাব ও ভাষা সমৃদ্ধ ষান্মাসিক সৃজন সাহিত্যের পিয়ার রিভিউড দ্বিভাষিক রিসার্চ জার্নাল ‘উদার আকাশ’ দুই দশকের বেশি সময় ধরে সম্পাদনা করছেন। কলেজে পড়ার সময় টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে, বন্ধু-বান্ধবীদের সহযোগিতায় প্রথম ‘উদার আকাশ’ (২০০২ সালে) প্রকাশ করেন। স্কুল জীবনে পড়ার সময় প্রথম সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি। ওই সময় কৃষিকাজ ও সংবাদপত্র বিক্রি করে কর্মজীবন শুরু করেন। ‘উদার আকাশ’ প্রকাশনা সংস্থা থেকে ইতিমধ্যে ১৫১টির বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উভয় বাংলার গবেষক ও পাঠক দরবারে সমাদৃত হয়েছে ‘উদার আকাশ’ প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু সাড়া জাগানো গ্রন্থ।
ফারুক আহমেদের রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘বিশ্বপ্রেম’। ফারুক আহমেদ-এর সম্পাদনায় প্রবন্ধ সংকলন ‘মোস্তাক হোসেনের জীবনী ও বাঙালি ঐতিহ্য’, ‘প্রতিশ্রুতি ও উন্নয়ন’, ‘ফুরফুরা শরিফের পয়গাম’, ‘কংগ্রেস ও বামশাসনে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক’, ‘পশ্চিমে সূর্যোদয় রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উলটপুরাণ’, ‘বিস্তীর্ণ আকাশ জুড়ে কাজী নজরুল ইসলাম’ এবং ‘বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম’। ইংরেজিতে লেখা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর একটি গবেষণা গ্রন্থও সম্পাদনা করেছেন ফারুক আহমেদ। ইতিমধ্যেই ফারুক আহমেদ সম্পাদিত ‘উদার আকাশ’ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা ‘সংখ্যালঘু ও মুখ্যমন্ত্রী’, ‘মর্যাদার সন্ধানে’, ‘আত্মপরিচয়ের অন্বেষণ’, ‘আত্মবিকাশের দর্পণ’, ‘রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অনগ্রসর ও সংখ্যালঘু’, ‘মূল্যবোধের অবক্ষয়’, ‘ভূমিপুত্রদের জাগরণ’ এবং ‘কুৎসার জবাব উন্নয়ন’। রাজ্য রাজনীতিতে পালা-বদলের সন্ধিক্ষণে এই প্রয়াস বঙ্গবাসীকে সচেতন করেছে। আগামীতেও মানুষের মর্যাদার সন্ধানে ‘উদার আকাশ’-এর প্রয়াস অটুট রাখতে তিনি দৃঢ়সংকল্প।
ফারুক আহমেদ একাধারে কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং সমাজ সচেতন নাগরিক। সহজেই তিনি মানুষের মধ্যে মিশে যেতে পারেন। তাঁর এই বিরল প্রতিভা এবং মূল্যবোধের সংমিশ্রণ আমাদের সমাজকে সমৃদ্ধ করবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ‘উদার আকাশ’ কেবল পত্রিকা নয়, আত্মমর্যাদার অভিজ্ঞান, ‘উদার আকাশ’ কেবল স্লোগান নয়, সুস্থ সমাজ গড়ার অঙ্গীকার। ‘উদার আকাশ’ দিচ্ছে ডাক, ঘরে ঘরে সাহিত্যের আলো পৌঁছে যাক।