লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশের সাথে ভারত, ভূটান এবং নেপালের আমদানী-রপ্তানি পরিচালনায় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বুড়িমারী স্থলবন্দর। কিন্তু বন্দরে পার্কিং সুবিধা না থাকায় রাস্তায় ট্রাকের লম্বা লাইনের তীব্র যানজটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বন্দরের ব্যবসায়ীবৃন্দ। এতে আমদানি রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী জিরো পয়েন্টে ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে চালু করা হয়। তখন থেকেই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারত, ভূটান এবং নেপালের আমদানী-রপ্তানি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বন্দর দিয়ে ভারত, ভূটান ও নেপাল হতে কয়লা, কাঠ, পাথর, সিমেন্ট, রাসায়নিক সার, কসমেটিক সামগ্রী, পশু খাদ্য, বিভিন্ন ধরণের ফলমূল, পিঁয়াজ, রসুন, আদা, চাল, ডাল, গম, বিভিন্ন ধরণের বীজ, তামাক ডাটা প্রভৃতি মালামাল দেশে আমদানী করা হয়। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হয় ইলিশ মাছ, ঝুট, সাবান, মেলামাইনের তৈরী বাসনপত্র এবং ঔষধ সহ আরো কিছু পণ্যসামগ্রী। তবে মালামাল লোড আনলোডের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় রাস্তার দু-পাশে দীর্ঘ সময় ধরে সারি সারি লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকে পণ্যবাহী ট্রাক। এতে সড়কে চলাচলে তীব্র যানজটে ভোগান্তীতে পরছে সাধারণ মানুষ। লোড আনলোডে পোহাতে হয় বিড়ম্বনা। এছাড়া পাথর ভাঙ্গা মেশিনের ধুলিকণার কারনে ঝুকি নিয়ে চলাচল করছে পথচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, প্রতিদিন হাজারো ট্রাক যাতায়াত করে এই বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকায়। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এসব ট্রাক বন্দর এলাকার বিভিন্ন রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। আর এতে করে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এই যানজটের কারণে চলাচলের সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়াও এসব মালবোঝাই ট্রাকের কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। পাথরের ধুলিকণার কারনে মুখে মাস্ক ও চোখে চশমা ছাড়া বুড়িমারী স্থলবন্দরের চলাচল প্রায় দুস্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে ব্যবসায়ীদের মতে, এ বন্দরে একটি স্থায়ী ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে কমবে যানজট। বন্দরের ইয়ার্ডে জায়গা সংকটের কারণে বর্তমানে পণ্যবাহী যানবাহন গুলো রাস্তায় মালামাল ওঠা নামার কাজ করছে ।
ট্রাকচালকেরা জানান, চাহিদার তুলনায় ট্রাক রাখার জন্য টার্মিনালে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই মাঝেমধ্যে রাস্তার পাশে ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখেন তাঁরা। পাথর লোড করার পর চালানের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। চালান না মিললে যেতে পারেন না তাঁরা। এটা তাঁদের জন্যও ভোগান্তির।
বুড়িমারী কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য বলেন, ‘জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে শুরু করে বন্দরের ঘুন্টি পর্যন্ত রাস্তাটি প্রশস্ত ও একটি বড় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে আমদানি-রপ্তানি আরও বাড়বে। তবে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে পাটগ্রাম পর্যন্ত পুরো রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। এটি শেষ হলে সমস্যা কমবে বলেও তিনি জানান।