মারুফ সরকার

একটি সমাজ বা রাষ্ট্রে যখন সুশাসন অনুপস্থিত থাকে তখন আর সেখানে মানুষের কল্যাণের কথা কেউ ভাবে না বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, জাতির অহংকার হিসেবে নতুন প্রজন্মের তরুণদের আখ্যায়িত করা হলেও অধিকাংশ তরুণ আজ বেকারত্বের গ্লানিতে ক্লান্ত। দিন বদলের শ্লোগান আর ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রতি বাস্তবায়নের খবর নেই।

শনিবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “বেকারদের কর্মসংস্থান অথবা বেকার ভাতার দাবি”তে বাংলাদেশ যুব শক্তি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের তো নাগরিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু এই সত্যটি আমরা একরকম ভুলতে বসেছি। আমরা খুব স্বাভাবিকভাবে ধরে নিচ্ছি, এখানে রাষ্ট্রের ভূমিকা নেই। তবে এ কথা বলছি না যে রাষ্ট্র সবাইকে সরকারি চাকরি দেবে। সক্ষম মানুষেরা যেন কাজ পান, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। অন্যথায় বেকার ভাতা দিতে হবে।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ‘বেকার’ মানুষদের জীবনে কী দুর্যোগ নেমে আসে, তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। যাঁরা ঋণ ফেরত দেবেন না, তাঁদেরই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রকৃত উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না। বড় শিল্পে সব মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত হবে না। অথচ আমএদর সরকার রা এর গুরুত্ব দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, সরকারের ভূমিকা ছাড়া এই বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার যথাযথ রাষ্ট্রীয় নীতি, যা সব সরকারকে মেনে চলতে হবে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র শুধু বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখবে না, তাকে সবারটাই দেখতে হবে।

তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা তো বলেন, দেশে যত উন্নয়ন হয়েছে তার সিংহভাগই এই সরকারের অবদান। উন্নয়নের সবটুকু অবদান যদি সরকারেই হয় তাহলে বেকারত্বের দায়টাও সরকারকে নিতে হবে। কালভার্ট আর ফ্লাইওভার নির্মাণ করলেই যদি দেশ উন্নত হতো তাহলে তো বেকারের সংখ্যা কমে যেত। সরকারের আজ্ঞাবহরা যতই উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে হাততালি দিক আর চটকদার কথা বলুক, যদি বেকারত্বের অবসান করতে না পারে তাহলে এ উন্নয়নের কোন মানে হয় না।

বাংলাদেশ যুব শক্তির হানিফ বাংলাদেশী’র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল আমেনী, সাধারণ সম্পাদক শেখ নাছির উদ্দিন, সংগঠনের উপদেষ্টা গোলাম ফারুক মজনু, সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম, আল-আমিন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মো. হানিফ বাংলাদেশ বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেশে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে যে লুটপাট আর বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে তা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হলে সবার আগে প্রয়োজন দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা। আমরা সরকারের কাছে শুধু উন্নয়ন চাই না, উন্নয়নের পাশাপাশি বেকারত্বের নাগপাশ থেকে মুক্তি চাই।

এসময় বাংলাদেশ যুব শক্তির আহ্বায়ক হানিফ বাংলাদেশী সংগঠনের পক্ষ থেকে ৪ দফা তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। ২৫ বছরের বেশি বয়সী সকল বেকার যুবককে বেকার ভাতা দিতে হবে। বিদেশে যেতে ইচ্ছুক যুবকদের সরকারি খরচে বিদেশে পাঠাতে হবে। বিদেশে যাওয়ার পর সরকারি খরচ আদায়ের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে এবং বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *