ভুরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নে পুলিশের হাতে গাজাসহ আটক মোজাফফর নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে । মৃত যুবক উপজেলার উত্তর ছাট গোপালপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াবের পূত্র।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতার্ (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, গতকাল রবিবার রাত আটটায় শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা বাজারের নিকট থেকে অটোচালক মোজাফফরকে সাড়ে তিন কেজি গাজাসহ আটক করে থানায় আনা হয়। রাতে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সাড়ে ১১টার দিকে ভূরুঙ্গামারী হাসপাতাল কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত সাড়ে তিনটের দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
মৃত মোজাফফরের শ্বশুর ইছব আলী ও শ্যালক সোহেল রানা সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জানান, আমরা রাতে তার আটকের খবর শুনি। পরে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে দেখতে এসেছি। কিভাবে কি ঘটেছে তা আমাদের জানা নেই।
ভূরুঙ্গামারী থানার এসআই আউয়াল জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার সন্ধ্যায় আমিসহ একদল টহল পুলিশ উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ধলডাঙ্গা ঝালবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করি। এসময় পুলিশ সন্দেহজনক একটি অটোরিক্সা থামাতে বললে রিক্সার ভিতর থেকে একজন যাত্রী ছুটে পালিয়ে যায়। পরে অটোরিক্সাচালক মোজাফফরকে আটক করে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যমতে সিটের নীচে সাড়ে ৩ কেজি গাজাসহ তাকে রাত ৮টার দিকে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: সিরাজুল ইসলাম জানান, পুলিশ রাত সাড়ে ১১টায় মোজাফফর নামে এক যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করে। সে মারাত্মক শ্বাস কষ্টজনিত রোগে ভুগছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পনের মিনিট পরেই পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টায় আবারো গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য পরামর্শ দেই। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: রেদওয়ান ফেরদৌস সজীব জানান, তাকে মৃত: অবস্থায় রাত সাড়ে ৪টায় হাসপাতালে নিয়ে আসে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ।
এদিকে মৃত মোজাফফর ব্যাটারীচালিত অটো চালাক। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে অটোচালকরা সমবেত হয়ে দুপুর দুইটার দিকে ধলডাঙ্গা এলাকায় বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে। এসময় অটোচালক আমজাদ, ইউসুফ ও নিহতের বড় ভাই আব্দুর রউফ দাবী করেন পুলিশের অবহেলায় মোজাফফরকে জীবন দিতে হল।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান জানান, তিনি ঘটনাটি জেনেছেন। নিহতের ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের কোন দায়বদ্ধতা আছে কিনা তা তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।