নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর মোহনপুরে সহকারী কমিশনার ভূমি ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা পেতে পদে পদে গুনতে হচ্ছে টাকা। ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছে জিম্মি সেবা প্রার্থীরা। বকশিস বন্ধে কঠোর নির্দেশনা চান ভূমি অফিসের সেবা গ্রহীতারা।
উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) সার্ভেয়ার, এসিল্যান্ড, নাজির, জমা সহকারী, অফিস সহকারী, পিয়ন ও দালালদের বকশিশ না দিলে মেলে না কাঙ্ক্ষিত সেবা। বকশিশ/ ঘুষ বাণিজ্য ঠেকানোর কার্যকরী উদ্যোগ নেই জেলা প্রশাসনের। ফলে সংশ্লিষ্টদের নীরবতার সুযোগ নিচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালালরা।
জমি খারিজের অনলাইনে আবেদন হওয়ার পরই তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসের জমা সহকারীর কাছে। সেখান থেকেই শুরু হয় জমি খারিজের সকল প্রক্রিয়া আর এখান থেকেই শুরু হয় ঘাটে ঘাটে টাকা দেয়ার খেলাও। মূলত ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে তহশীলদারদের অলিখিত সহকারী বেসরকারি পাবলিক কর্তৃক খারিজের নথি যাচাই বাছাই, প্রসেসারভার এর নোটিশ স্বাক্ষর, সার্ভেয়ার চেকিং, নাজিরের ডিসিআর প্রদান, হোল্ডিং খোলা, খাজনা প্রদান সর্বশেষ জমি খারিজের কাগজপত্র তোলাসহ যে কোনো সেবায় বকশিশ বা খরচাপাতি ছাড়া এখন চলেই না। পরিমাণ কখনো ১০০ টাকা, আবার কখনো এক হাজার, দশ হাজার, আবার কাগজ পত্রে সমস্যা থাকলে কখন লাখও ছাড়িয়ে যায়। এতে জমি খারিজ করতে আসা সেবা গ্রহীতারা পদে পদে চরম হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। যেনো দেখার নেউ নেই। বছরের পর বছর বকশিশ বাণিজ্যে আটকে আছেন সেবা গ্রহীতারা। বকশিশ ছাড়া মেলে না সেবা। নড়ে না খারিজসহ অন্যান্য ফাইলও । ফলে বাধ্য হয়েই সেবা গ্রহীতাকে গুনতে হচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। এতে অতিরিক্ত ব্যয়ে নিঃস্ব অনেকে। কেউ কেউ ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে গিয়ে বিক্রি করছেন জমি-জিরাতও। তবুও সহসা নিস্তার মিলছে না খরচাপাতি বাণিজ্য থেকে। তবে সেবা গ্রহীতারা নিঃস্ব হলেও অর্থ-বিত্তে ফুলে-ফেঁপে উঠছে ভুমি সেবা সংক্রান্ত পেশাজীবীসহ দালাল শ্রেণি। কেউ কেউ গড়ছেন আলিশান অট্টালিকাও। ভূমি অফিসে এলেই ঘাটে ঘাটে দিতে হয় বকশিশ। এত কিছুর পরও ভূমি সেবা সংক্রান্ত দুর্নীতি ঠেকানো, সেবা গ্রহীতাদের সাথে খারাপ আচরণ, সেবা পেতে দিনের পর দিন হয়রানি বন্ধে কোনো কার্যকরী উদ্যেগ লক্ষ করা যায়নি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও তা জোরালো নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সামনেই ঘটছে এসব খরচাপাতি বাণিজ্য। এদিকে ভূমি অফিসের সেবা সংক্রান্ত এসব বকশিস বা খরচাপাতির ব্যবস্থা চরম দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ নীরবতার সুযোগ নিয়ে উৎসাহিত হয় ভূমি অফিসের এক শ্রেণির কর্মকর্তা- কর্মচারী ও দালাল চক্রের হোতারা।
ভূমি সেবা সংক্রান্ত অনিয়মের চিহ্নিত স্থানগুলো হলো-জমা সহকারী, উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) সার্ভেয়ার, এসিল্যান্ড, নাজির, কম্পিউটার অপারেটর, অফিস সহকারী, প্রসেসারভার, পিয়ন ও বহিরাগত দালাল।
সেবা গ্রহীতা ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে জানা গেছে, জমি খারিজ করতে নথি প্রতি খরচ তহশিলদার খরচ ৭’শ টাকা ঝামেলা থাকলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা, বহিরাগত দালাল কর্তৃক নথি চেকিং ২’শ, সার্ভেয়ার চেকিং ৫’শ, এসিল্যান্ডের স্বাক্ষরের নামে টাকা, জমা সহকারি ফাইনাল করতে ৩’শ, নোটিশ জারি ২’শ, ডিসিআর ফি ১২’শ আর্কাইভ করতে ২’শ, হোল্ডিং খুলতে সর্বনিম্ন ২’শ সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা।
অথচ সরকারি খরচ আবেদন,কোর্ট ফি,নোটিশ জারি, ডিসিআর ফি বাবদ সর্বমোট ১২২০ টাকা।
ভুক্তভোগী ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, চাকুরি বিধি অনুযায়ী এক কর্মস্থলে তিন বছর অতিবাহিত হলে বদলী করা হয়। অথচ তিন বছরের অতিরিক্ত সময় ধরে একই কর্মস্থলে রয়েছেন সার্ভেয়ার তৃসিত কুমার সাহা, কেশরহাট ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল কাশেম ও ধোরসা ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা সজিবুল ইসলাম। তাদের বিষয়ে চাকুরি বিধি প্রতিপালন পরিলক্ষিত হয়নি বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা।
উপজেলার মৌগাছি ইউপির হরিহরপুর ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামিমা আকতার এখানে সেবা নিতে আসা গ্রাহকদের সাথে খারাপ আচরণসহ দূর্বব্যবহার করেন। এখানকার পুরাতন বিল্ডিংটি তিনি (শামিমা) দালালদের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন আর সেখানে বসেই সরকারি কর্মচারীরমত অফিসে প্রকাশ্যে সেবা গ্রহীতাদের জিম্মি করে অর্থ আদায় করছেন বহিরাগত দাদাল রনি ও শামিম। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে রনি ও শামিম কিনেছেন দামি ব্র্যান্ডের ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল ও। ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা শামিমা কখনও সরাসরি আবার কখনও তার মনোনীত রনি ও শামিমকে দিয়ে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে জমি খারিজ খাজনা সংক্রান্ত কাজ করে দেন। রনি ধোরসা ভূমি অফিসের তহশিলদার সজিবুল এর শ্যালকও বটে।
এছাড়াও এ অফিসের কর্মচারী রাকিব ও পারভীনের বিরুদ্ধেও টাকা পয়সা নিয়ে ভুমিসেবা দেওয়ার গুরুত্বর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই পারভীনকে এসিল্যান্ড অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তহশিলদার শামিমার বিরুদ্ধে বিদিরপুর বকপাড়া গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে আজিজুল খান (৪৫) অভিযোগ করে বলেন, আমার ৭৪ শতক জমি খারিজের জন্য হরিহরপুর ভূমি অফিস আবেদন দিলে অনেকদিন ঘোরানোর পরে সাড়ে ১৭ শতক ধানী জমি খারিজ হবে বলে জানান তহশিলদার। এরপর তহশিলদার এর মেইন লোক রনি জমিটি খারিজ করে দিতে দু’বারে আমার থেকে নগদ সাড়ে বারো হাজার টাকা নিয়ে কাজটি করে দেন।
ধুরইল ইউপির আমরাইল গ্রামের মৃত ইসমাইল মন্ডলের ছেলে বাবুল মন্ডল (৩৮) জমি খারিজ করে হোল্ডিং খুলতে হরিহরপুর ভূমি অফিসে যান। সেখানে কর্মরত পারভীন প্রস্তাবিত খতিয়ান ও হোল্ডিং খোলার জন্য কাগজ ও দু’শ টাকা নিয়ে এক সপ্তাহপর যোগাযোগ করতে বলেন, দুই দিন পরেই পারভীন মুঠোফোনে বাবুলকে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আসতে বলেন। তিনি আসলে পারভীন ও রাকিব বলেন, আপনার প্রস্তাবিত খতিয়ান ও হোল্ডিং খোলা হয়ে গেছে খতিয়ানের জন্য ৮’শ ও হোল্ডিং খোলার জন্য ৭’শ টাকা দিতে হবে। একথা শুনে তিনি টাকা দিতে আপত্তি জানান এবং বিষয়টি তহশিলদার শামিমাকে জানালে তিনি বলেন, আপনাকে ১৫’শ টাকা দিয়েই হোল্ডিংয়ের কাগজ নিয়ে যেতে হবে। নিরুপায় বাবুল অগত্যা ঘুষের ১৫’শ টাকা দিয়ে কাগজটি নিতে বাধ্য হয়। যার হোল্ডিং নম্বর ১১৩৭, প্রস্তাবিত খতিয়ান নং ১০৫৩ মৌজা আমরাইল।
আরেক অভিযোগকারী ভীমনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউজ্জামান বলেন, আমি খাজনা দিতে গেলে তহশিলদার শামিমা আমার সাথে খারাপ আচরণ করে আমার শিক্ষকতা পেশা নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। তিনি আমার কাজটি করে দেননি। তিনিও সরকারি চাকুরি করেন আমিও করি আমি তার আচরণে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এখানে সেবা নিতে আসা গ্রহিতাদের সাথে এমন খারাপ আচরণের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তহশিলদার শামিমা’র বিরুদ্ধে।
এছাড়াও গত ২২ অক্টোবর শনিবার বেলা ১১টার দিকে হরিহরপুর ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, অফিস কর্মচারীর মত শামিম ও রনি তহশিলদার শামিমা আকতারের সঙ্গে কাজ করছেন। সেখানে আরো একজন উপস্থিত ছিলেন তিনি হলেন মাখনপুর গ্রামের দলিল লেখক আক্কাস আলীর সহকারী বসন্তপুর গ্রামের ফারুক দেওয়ান (২৪)। এই ফারুকের বিরুদ্ধ অভিযোগ রয়েছে জমি জমা সংক্রান্ত জটিল দুই নম্বর কাজ যা হওয়ার নয়, কেউ করতে পারেনা তা এই কাজগুলি ফারুক অনায়াশে তহশিলদার শামিমার মাধ্যমে করে দেন বলে এলাকায় চাওর হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, জমি রেজিষ্ট্রেশন করতে ৫’শ থেকে ২ হাজার টাকার বিনিময়ে ফলস চেক প্রদান করেন তহশিলদার শামিমা। ফলস চেকের টাকা জমা হয়না সরকারি নথিতে। শর্ত থাকে যার নামে ফলস চেক দেওয়া হয় জমি রেজিষ্ট্রেশন করার পরে চেকটি ছিড়ে ফেলতে হবে।
এদিকে মোহনপুর সহকারি কমিশনার ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার তৃসিত কুমার সাহা’র বিরুদ্ধে জমি খারিজ সংক্রান্ত প্রতি কেস বাবদ স্বাক্ষর করতে ৫’শ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর যে সব সেবা গ্রহীতা তার সাথে দেখা করেন না সে কেসগুলি পাশ করে তার প্যানেলে রেখে দেন এবং সেবা গ্রহিতারা আসলে টাকা নিয়ে কেসটি এসিল্যান্ডের প্যানেলে পাঠিয়ে দেন বলে অফিসের একটি বিশ্বস্ত সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে। তার প্যানেলে পাশ করা কেসগুলি হলো ১৩১৩, ১৩৮৫, ১২০১, ১২১২, ১২২৮, ১৩৪৯ একাজে সার্ভেয়ারের সাথে জড়িত আছেন জমাসহকারি কেফায়েতুল্লাহ।
এখানেই শেষ নয় অফিসের টেবিলে বসে কাজ করেন সার্ভেয়ার এর অলিখিত বেসরকারি সহকারী শহিদুল নামে এক ব্যক্তি। সার্ভেয়ার নির্দেশে এ শহিদুল টাকা নিয়ে খারিজ কেস পাশ করে দেন বলে অভিযোগ করেন মৌগাছি ইউপির আকুবাড়ি গ্রামের মৃত ইয়ানুচ ওরফে ইউনুচ আলীর ছেলে নাজমুল হক (৫২) তিনি বলেন, শহিদুল আমার খারিজ কেস পাশ করার জন্য সার্ভেয়ার এর সামনে নগদ ৫ হাজার টাকা ও ডিসিআর কাটতে দেড় হাজার টাকা নিয়ে আমার কাজটি করে দিয়েছেন। যার হোল্ডিং নম্বর- ৫৮২,খতিয়ান-৫৮৮।
বাবুল মন্ডল আরো জানান, মোহনপুর সহকারি কমিশনার ভূমি অফিসের নাজির মোঃ নাজমুল হোসেন ভিপি সম্পত্তি পুকুর খারিজ করে দিবেন বলে ১ লাখ টাকায় মৌখিক চুক্তি করে নগদ ১৭ হাজার টাকা গ্রহন করেন। প্রায় ৬মাস অতিবাহিত হলেও তিনি এখনো তাকে শান্তনা দিচ্ছেন ডিসি স্যার স্বাক্ষর করলেই আপনার কাজটি হবে একটু ধৈর্য ধরুন। যার তফসিল পরিচয় আমরাইল মৌজা, রকম পুকুর, দাগ নং ৪৫৫৪, খতিয়ান ১ নম্বর খাস খতিয়ান পরিমান ৩৫ শতাংশ পুকুর।
এবিষয়ে নাজির মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, বাবুলের কাজটি করে দেব বলে একটা চুক্তি হয়েছিল। পররর্তীতে তার থেকে নেওয়া ১৭ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। সে কাজ করতে টাকা দিয়ে সবাইকে বলে বেড়ায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভূমি সেবা গ্রহীতা বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট সবাই অবৈধভাবে এসব টাকা পয়সা নিয়ে ভূমি সেবা প্রার্থীদের কাছ থেকে নিয়ে থাকেন। এটা চরম দুর্নীতি।’ এ জন্য অনেক ক্ষেত্রে সেবা গ্রহীতারাও দায়ী। তারাও অনেক সময় বাড়তি টাকা দিয়ে দ্রুত কাজ করাতে চান।’
মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার তৃসিত কুমার সাহা (Surveyor Trishit Kumar shaha) বলেন, অফিসে লোক কম থাকায় শহিদুল নামে একজনকে দিয়ে কাজ করাই। আমার নাম করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই।
এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি প্রিয়াংকা দাস বলেন, ভূমি সেবা নিতে কেউ হয়রানির স্বীকার হয়নি। লোকবল কম থাকায় বেসরকারি লোকজন দিয়ে কাজ করানো হয়। টাকা নেওয়ার ঘটনা সত্য নয়।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহ্ রা বলেন,‘ভূমি সেবা পেতে ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে হয়। এটা জানতাম না। ভূমি অফিসগুলোতে বেসরকারি লোককে দিয়ে কাজ করাতে নিষেধ করেছি। সেবা নিতে এসে কেউ হয়রানির স্বীকার হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক টেলিফোনে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন,যারা ভূমি সেবা নিতে গিয়ে ভোগান্তির স্বীকার হয়েছেন তাদেরকে আমার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করতে বলুন। আর তা না হলে আপনি তাদের হয়ে অভিযোগ করুন। বলে ফোন রেখে দেন।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল কে একাধিকবার ফোন করেও বক্তব্য জানা যায়নি।