রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা ঃ-
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ভারতীয় সীমান্ত ঘেষে কাশিপ্রু ইউনিয়নের মহারাজা হাট তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশাল মাঠজুড়ে শুরু হয়েছে আনন্দ মেলা। চলছে নাচের নামে অশ্লীল নৃত্য রাতভোর যাত্রা গান। এদিকে থানা অফিসার ইনর্চাজ আব্দুল মান্নান গতকাল শনিবার মুঠোফোনে বলেন মেলার বিষয়ে ইউএনও ও ডিসি সাহেবের সাথে কথা বলতে। কারন মেলার বিষয়টি আমার অধীনে নয়। শুনেছি মেলার অনুমতি নাকি পেয়েছে তবে কাগজ আমি পায়নি।

এদিকে মেলার নামে অশ্লীলতা চলছে। সুযোগ পেলেই আমাদের উঠতি বয়সের ছেলেরা প্যান্ডেলে ঢুকে উপভোগ করছে এ অশ্লীলতা। প্রতিবার মেলার নামে অশ্লীলতা চললেও কিছুই বলে না প্রশাসন। এতে আমরা অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে তাকাতে পারিনা । চোখের সামনে এমন অশ্লীলতায় মেলা চললে নিজেরে আর্ত্বসন্মান বোধ থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে কথা গুলো আমাদের প্রতিবেদকের কাছে বলেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ মেলার নাম করে এখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আনাগোনা বেড়েছে, রাতে মাইকের উচ্চ আওয়াজের কারনে ঘুমের সমস্যা চলমান ডিগ্রী ২য় বর্ষের পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও সামনে এস এস সি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি পড়াশুনায় চরম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও মেলার অন্তরালে মাদকের আদান প্রদান চরম বিস্তার লাভ করেছে বলে স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়। গত ১৮ ডিসেম্বর মহারাজা হাট আনন্দ মেলার উদ্ধোধন করেন ঠাকুরগাও-২ আসনের এমপি দবিরুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ৬নং কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আ,লীগ নেতা আব্দুর রউফ।

গতকাল শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মহারাজা কিন্ডার গার্ডেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝে অবস্থিত বিশাল মাঠে সাজানো হয়েছে মেলা। এখানে বসানো হয়েছে একটি যাত্রা পালার প্যান্ডেল। পাশেই ২টি প্যান্ডেল মিনি সার্কাস ও যাদু প্রর্দশনী। এছাড়াও হাউজি খেলার জন্য তৈরী করা হয়েছে প্যান্ডেল,বসানো হয়েছে হরেক রকমের দোকান।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মিনি সার্কাস ও যাদু প্রর্দশনীর অন্তরালে চলছে অশ্লীল নৃত্য নাচ গান,এছাড়াও যাত্রা পালার নামে রাতভোর চলছে অশ্লীল নাচ গানের যাত্রা পালা। যাত্রা পালা নাচ গান ছাড়া বিনোদন মুলক বা দেখার মত আর কিছু নেই এ মেলায়।

কথা হয় মেলা দেখতে আসা শাহাজান আলীর সাথে তিনি বলেন, এসেছিলাম মেলা দেখতে তবে একা, কারন মেলার যে অবস্থা তাতে পরিবার নিয়ে তো আসা সম্ভব নই। ধর্মগড়ের সালাম বলেন,এ মেলা কোন ঐতিহ্য নিয়ে হচ্ছে আমার জানা নেই। তবে এ রকম গ্রাম পল্লী এলাকায় মেলার নামে অশ্লীলতা উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা খারাপের দিকে ধাপিত হবে বলে তিনি মনে করেন। একইভাবে অনেকের অভিযোগ রয়েছে মেলার নামে এ ধরনের অশ্লীলতা নিয়ে।

তারপরও স্থানীয় প্রশাসনের দুই কর্তা বাবু মেলার অনুমতির কাগজে কলমে হয়েছে কিনা নিশ্চিত করতে পারেন নি। অথচ মেলা চলছে দেদারশে। এছাড়াও তাদের কাছে নেই মেলা চলার অনুমোদনের বৈধ কাগজ পত্র।

মেলা কমিটির সভাপতি ও ৬নং কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মুঠোফোনে বলেন,মেলা ১৫ দিনের অনুমতি পেয়েছি বৃহস্পতিবারে সরকারী ছুটি থাকার কারনে কাগজ পাই নি। তবে রবিবার অফিস খুললে অনুমতির কাগজ হাতে পাবো।

এ ব্যাপারে ইউএনও খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন,মেলা অনুমতি পেয়েছে শুনেছি কিন্তু কাগজ পাই নি তবে আজ (শনিবার) সন্ধায় হয়ত কাগজ পেতে পারি। এ প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, মেলা কমিটির লোকজন মেলা চালানোর আবেদন করেছেন তাদের লিখিত ভাবে কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি । তবে অশ্লিলতার কোন অভিযোগ পেলে তাৎক্ষনিক মেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন