নাগেশ্বরী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ঈদুল আযাহার আগে বেতন বোনাস কিছুই পায়নি রায়গঞ্জ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারী।
বেতন, বোনাস ৩ মাস ধরে পাচ্ছে না রায়গঞ্জ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মচারী।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সোহরাব হোসেনকে দূর্নীতির দায়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি গত ২৩/০৪/২০২৩ তারিখ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েও পেশিবলে অনৈতিকভাবে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে পড়েছেন। তিনি নিজেই অন্যায় করেছেন,দূর্নীতি করায় তদন্তে প্রমান হওয়ার পরেও কুড়িগ্রাম জজ কোর্টে মিথ্যা মামলা করেছেন ম্যানেজিং কমটির বিরুদ্ধে। মামলা নিষ্পত্তি না হতেই দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকে গত ১৩ এপ্রিল/২৩ একটি চিঠি এনে পেশিবলে অফিস কক্ষে তালা লাগান ১৭ এপ্রিল/২৩ ইং।
গত ২২ মার্চ/২৩ তারিখে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিনিয়র সহকারী শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার জন্য কমিটির সভাপতি স্বাক্ষরিত নিয়োগ পত্র দেয়া হয়। কমিটির সম্মানিত সদস্য ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এস এম গোলাম মোস্তফাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে চেয়ারে বসান। তাঁকে দায়িত্ব দেয়ার পর গত ২৮/০৩/২০২৩ তারিখে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এসএম গোলাম মোস্তফা ও সভাপতি মোঃ আব্দুল হক সরকার স্বাক্ষরিত পত্র, নিয়োগপত্র, যোগদান পত্র এবং রেজুলেশন বোর্ড অফিসে জমা দিয়ে রিসিভ কপি নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ বোর্ডের পরিদর্শক প্রফেসর আবু হেনা মোস্তফা কামাল’র সঙ্গে দেখা করলে প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন আমরা কোন পত্র পাই নাই। সভাপতি রিসিভ কপি দেখালে পরিদর্শক মহোদয় বুঝতে পারেন বিষয়টি কি হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফা স্বাক্ষরিত ফেব্রুয়ারী ও মার্চ/২৩ দুই মাসের বেতন ভাতার বিল সোনালী ব্যাংক লিঃ নাগেশ্বরী শাখায় জমা করা হলে শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ দু’ মাসের বেতন উত্তোলন করেন।
ঈদুল ফিতরের পর উৎসব ভাতা ও বৈশাখী ভাতা বিল ব্যাংকে জমা করা হলেও রহস্যজনক ভাবে বিল পোষ্টিং না করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা উৎসব ভাতা ও বৈশাখী ভাতা উত্তোলন করতে পারেনি। কারণ অপসারিত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন স্বাক্ষরিত একটি আবেদন ডাকযোগে ব্যাংকে আসলে ব্যবস্থাপক এরশাদুল হক উৎসব ভাতা ও বৈশাখী ভাতা বিল দুটি বিদ্যালয়ের সভাপতি/ সম্পাদক বরাবর ফেরত পাঠান। ডাক পিয়নের নিকট থেকে বিল দুটি সোহরাব হোসেন বুঝে নেন। মামলা দায়ের করা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন দূর্নীতির দায়ে অপসারিত হয়েও যেকোন কিছুর বিনিময়ে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক প্রফেসর আবু হেনা মোস্তফা কামাল’র মাধ্যমে বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ কামরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি এনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পদে বহাল থাকার অজুহাতে চিঠিটি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদনসহ প্রেরণ করেন। এ সুবাদে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড নাগেশ্বরী শাখার ব্যবস্থাপক এরশাদুল হক রায়গঞ্জ বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের জমা দেয়া বিলগুলি সোহরাব হোসেনের পক্ষ নিয়ে ডাকযোগে ফেরত পাঠান। গত ১৭ এপ্রিল/২৩ সোহরাব হোসেন ভাড়াটিয়া কিছু লোকজন ডেকে এনে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে অফিস কক্ষে তালা লাগান। মান সম্মান রক্ষার তাগিদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এস এম গোলাম মোস্তফা বিদ্যালয়ের সভাপতিকে ফোন করে অফিস কক্ষ থেকে রাস্তায় চলে যান। কিছুক্ষনের মধ্যে সভাপতি ৯৯৯ নম্বরে সহায়তা চেয়ে ফোন করলে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরবর্তীতে এপ্রিল/২৩ মাসের বিল (সরকারি বেতনের অংশ) ব্যাংকে জমা করা হলে সেটিও ব্যবস্থাপক ডাক যোগে বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠিয়ে ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছেন বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
এতে স্পষ্ট প্রমান হয়েছে, সোনালী ব্যাংক লিঃ নাগেশ্বরী শাখা শিক্ষকদের মর্যাদা দিতে জানে না এবং মানবতাবোধ হারিয়ে ফেলেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত ঈদুল ফিতর উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা, এপ্রিল/২৩ বিল, মে/২৩ বিল, জুন/২৩ ও ঈদুল আজাহা উৎসব ভাতাসহ মোট ৬টি বিল প্রদানের ব্যবস্থা করে শিক্ষকদের মানবেতর জীবন যাপনের হাত থেকে রক্ষা করে; ন্যায্য পাওনা পেতে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী দাবী করেছেন।
উল্লেখ্য ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোহরাব হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিলেও তিনি ক্ষান্ত হননি। কারণ তিনি কমিটি ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মহোদয়ের নিকট ঈদুল আযহার আগে কমিটি ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গত ৯ এপ্রিল/২৩ তারিখে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে চলে আসেন। কমিটির সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শামছুল আলমের সঙ্গে দেখা করলে তিনি শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শকের নিকট ফোনে কথা বলেন। সোহরাব হোসেন কমিটির সঙ্গে দ্বন্দ্ব করে অশোভনীয় আচরন করে মামলাও করেছেন অপর দিকে ব্যাংকে আবেদন দিয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের বোনাস, বেতন বন্ধ রেখেছেন। আবার রেজুলেশন ছাড়াই জজ কোর্টের দোতরফা রায়ে কৌশলে চেয়ারে বসে আছেন। এভাবেই সময় পার করছেন অথচ বেতন বোনাস তোলার ব্যর্থ প্রচেষ্টায় শিক্ষক কর্মচারীদেক হয়রানী করছেন।