রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেজে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে দুই ব্যবসায়ির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল হাইয়ের স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় কুড়িগ্রাম সংস্থাপন শাখা রেজাউল করিম জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম স্বাক্ষরিত এ আদেশে বলা হয়েছে প্রশাসনিক কাজের স্বার্থে এ কর্মচারীকে বদলী করা হলো। এ আদেশ ৩০ অক্টোবর তারিখের মধ্যে কার্যকর হবে অন্যথায় ৩১ অক্টোবর তারিখে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত হবেন।
৩০ অক্টোবর রবিবার দুপুরের মধ্যে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাযার্লয়ে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অফিস আদেশ অমান্য করে পরদিন সোমবার সকালে রৌমারী ত্যাগ করেছেন আব্দুল হাই।
স্ট্যান্ড রিলিজ বিষয়ে একাধিক কর্মকর্তার মতামত জানতে চাইলে তারা এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
প্রসঙ্গত, ৫ অক্টোবর রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল হাই নিজেকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিচয়ে রৌমারী থানা মোড় বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার ও রৌমারী উপজেলা গেট সংলগ্ন ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক মিন্টু মিয়া ও সুজন মিয়াকে ভ্রাম্যমান আদালত বসানোর কথা বলে দুই বছরের জেল ও দোকান সিলগালা করার ভয় দেখান। এতে ভীতি সঞ্চারিত হয়ে মিন্টু মিয়া বিকাশে ৩৫ হাজার টাকা ও সুজন মিয়া ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে আবারও দোকানে গিয়ে টাকা নেয়ার এমন অবস্থার পায়তারা করলে আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয় জনতা তাকে আটক করেন। পরে রৌমারী সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল করিম, ২নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম রানা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান রবিন টাকা ফেরৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আব্দুল হাইকে জিম্মায় ছাড়িয়ে নেন। এসময় উপস্থিত জনতা ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে অফিস সহকারী আব্দুল হাই দুই দোকান থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সুমন আলী স্ব-প্রণোদিত হয়ে একটি মিস মামলা রুজু করেন। একই সঙ্গে এই ঘটনার তদন্তের জন্য রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করেন এবং আগামি ১১ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।