ওয়ালিউর রহমান \
লালমনিরহাট সাবেক সদর সাবরেজিষ্ট্রার রাম জীবন কুন্ড’র বিরুদ্ধে শহরের প্রায় কোটি টাকা মুল্যের সরকারী জমি মালিকানায় রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ফঁাস হয়ে পড়লে কতিপয় সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তাদেরকে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। জানা গেছে, লালমনিরহাট শহরের আলোরুপা মোড়স্থ প্রায় কোটি টাকা মুল্যের ৮ শতাংশ জমিসহ একটি পরিত্যাক্ত বাড়ীতে সাবেক পুলিশ সদস্য আফতাব হাসান দীর্ঘদিন থেকে সরকারের কাছ থেকে লীজ নিয়ে ভোগ দখল করে আসছিল। সরকারের এই মুল্যবান জমিসহ বাড়ীটি বিভিন্ন লোকজনের নজরে আসলে সুচতুর পুলিশ সদস্য ফন্দি আটতে থাকে জমিটি কিভাবে নীজের নামে নেয়া যায়। সে অনুযায়ী উক্ত পুলিশ সদস্য রংপুরে আলম নগর বিহারী ক্যাম্পে গিয়ে জনৈক রাজিয়া খাতুন ও তার ভাই মুন্নার সাথে শলা পরামর্শ করে তাদেরকে জমির মালিক সাজানো হয় এবং পরিকল্পনা করা হয় রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার। জমির খাজনা, খারিজ, রেকর্ড ও পর্চা ছাড়াই গত ২১/১/২০২০ইং তারিখে লালমনিরহাট সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে সাবেক পুলিশ সদস্য আফতাব হাসানকে নামে মাত্র মুল্যে রেজিষ্ট্রি করে দেয় বিহারী রাজিয়া খাতুন ও তার ভাই মুন্না। যার দলিল নং-৪৭৯/২০। দাগ নং-৩৩০, জেএল নং-২৮ জমির পরিমান ৮ শতাংশ। জমিটির রেজিষ্ট্রি দলিলে স্বাক্ষর করেন তৎকালীন সাবরেজিষ্ট্রার রাম জীবন কুন্ড। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দলিল লেখক বলেন, উক্ত সাবরেজিষ্ট্রার ওই জমি রেজিষ্ট্রি করতে কয়েক লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে তবেই দলিলে স্বাক্ষর করেছেন। পৌর ভুমি অফিস জানায়, ওই জমির কোন পর্চা বা রেকর্ড আছে বলে আমাদের জানা নেই। কিন্তু খাজনা খারিজ ছাড়া কিভাবে জমি রেজিষ্ট্রি হয়েছে তা আমাদের বোধ্যগম্য নয়। পৌর ভুমি অফিসের তহশিলদার মাহাফুজ আলম জানান, উক্ত পুলিশ সদস্য লীজ নিয়ে বসবাস করে আসার এক পর্যায়ে জমির ভুয়া মালিকানা সাজিয়ে রেজিষ্ট্রি করে নিয়ে কোন লাভ হবে না। সরকারী জমি কেউ সহজেই নিজের নামে করে নিতে পারে না। সরকারী প্রায় কোটি টাকা মুল্যের সম্পত্তি মালিকানায় রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার ঘটনাটি জানাজানি হয়ে পড়লে তোলপাড় অবস্থার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে একজন সাংবাদিক খবর পেয়ে দলিলের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে জেলারেজিষ্ট্রার বরাবরে তথ্য ফরমে আবেদন করেন। ফলে সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে তোলপাড় অবস্থার সৃষ্টির পাশাপাশি ওই সাংবাদিককে ম্যানেজ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন সাবরেজিষ্ট্রার রাম জীবন কুন্ড। পরবর্তীতে অনেক তৎবীর চালিয়ে ওই সাংবাদিকসহ আরো কয়েকজন সাংবাদিককে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এ ব্যাপারে সাবেক সাব রেজিষ্ট্রার রাম জীবন কুন্ড’র সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা রেজিষ্ট্রার আসাদবীন খালিদ এর সাথে কথা বললে তিনি কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।