লালমনিরহাট প্রতিনিধি \
লালমনিরহাটের হাড়ীভাঙ্গা এলাকার মোঃ আবুল কালাম আজাদের পুত্র বেলাল হোসেন স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন। থানা পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রী লাবনী বেগম (২১) ও তার প্রেমিক দুলাভাই আলমগীর হোসেন (৩০) কে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সুত্র জানায়, সদর থানার হাড়ীভাঙ্গা গ্রামের মাইক্রোবাস ড্রাইভার বেলাল হোসেনের (২৯) সাথে বড়বাড়ী ইউনিয়নের বৈরাগিকামার গ্রামের লাবনী বেগম (২১) এর সাথে গত ২৪/৬/২০২০ইং তারিখে বিয়ে হয়। কিন্তু লাবনী তার এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। ফলে প্রেমিক দুলাভাই আলমগীর হোসেনের সাথে পরিকল্পনা করে স্বামী বেলাল হোসেনকে হত্যা করার জন্য। এরই প্রেক্ষিতে আলমগীর হোসেন (৩০) গত ২৫ জুলাই মোটর সাইকেল যোগে বেলাল হোসেনকে লালমনিরহাটে নিয়ে আসে এবং তাকে সেভেন আপের সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আদীতমারীর উদ্যেশে রহনা হয়। তাকে পুর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছুরি দিয়ে হত্যা করে সারপুকুর ইউনিয়নের পাঠানটারী গ্রামস্থ্য লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কের পাকা রাস্তার পাশে একটি পাট ক্ষেতে লাশ ফেলে দিয়ে চলে যায়। ঘটনার দুই দিন পর থানা পুলিশ গত ২৭ জুলাই ৩.১৫ ঘটিকার সময় তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত লোকজন লাশটির পরিচয় শনাক্ত করে। এব্যাপারে নিহত বেলাল হোসেনের মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৯, ধারা ৩০২/২০১/৩৪ তাং ২৮/৭/২০২০ইং। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্তে মাঠে নামে এবং মৃত বেলাল হোসেনের সদ্য বিবাহিত স্ত্রী লাবনী বেগম (২১) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত লাবনী পুলিশের কাছে গুরুপ্তপুর্ন তথ্য প্রদান করে। এই তথ্যের ভিত্তিতে থানা পুলিশ গত ৩ আগষ্ট বড়বাড়ী এলাকা হতে খুনি আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করে। থানা পুলিশ জানায়, মৃতের স্ত্রী লাবনী বেগমের সাথে দুলাভাই আলমগীর হোসেনের দীর্ঘদিন থেকে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। দীর্ঘদিন যাবত তার শ্যালিকা লাবনী যাতে অন্যত্র বিবাহ করতে না পারে তার জন্য সকল প্রকার ষড়যন্ত্রমুলক চেষ্টা অব্যাহত রাখে দুলাভাই আলমগীর হোসেন। অবশেষে গত ২৪ জুন বেলাল হোসেনের সাথে সুন্দরী লাবনী বেগমের বিয়ে সম্পন্ন হলে ক্ষীপ্ত হয়ে দুলাভাই আলমগীর হোসেন বেলাল হোসেনকে হত্যা করার পরিকল্পনায় সফল হয়। এই ক্লুলেস মামলাটি দ্রুত উৎঘাটনের জন্য পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। প্রেক্ষিতে আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে মালার আই,ও এস আই আনিসুজ্জামান আনিস মামলাটির মুল রহস্য দ্রুত উৎঘাটন করতে সক্ষম হন। এই মামলার আসামী গ্রেফতার হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সুপার এর সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। উক্ত প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, প্রত্যেকটি ক্লুলেস মামলার রহস্য উৎঘাটন করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং আমরা এতে সফল হচ্ছি। তিনি আরো জানান, পুলিশের মুল কাজ হচ্ছে অপরাধ চিহ্নিত করে অপরাধিকে আইনে সোপর্দ করা। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারনে এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এ কারনে সামাজিক ভাবে জনগণকে সচেতন হতে হবে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। উক্ত প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম, আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আনিস। এ প্রেস ব্রিফিং এ জেলার কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।