ফারহানা আক্তার, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাট ক্ষেতলালে৷ চলতি রবি মৌসুমের শুরুতেই সারের সংকটের গুজব ছড়িয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট করে নৈরাজ্য তৈরি করেছে ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর চৌমহনী বাজারের অসাধু সার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এর ফলে কৃষকদের কিনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে
সরকারি ভাবে সারের সংকট নেই। তবুও কিছু কিছু বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরী করেছে স্থানীয় সার বিক্রেতারা। সার না পেয়ে শীতকালীন ফসল রবিশষ্যে চাষাবাদে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। এছাড়াও কিছু সার বিক্রেতার বিরুদ্ধে দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। যদিও সার বিক্রেতারা বলছেন, ন্যায্য মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে।.
একই অভিযোগ করে এলাকার একাধিক কৃষক বলেন, চৌমহনী বাজারের লিটন হাজি সুজাউল আঃ মুমিন সাকিলুর ইমুন মিঠু সার ব্যবসায়ী তাদের দোকানে সার নিতে গেলে মামুদপুর ইউপি’র মিনিগাড়ী ধনতলা সমন্তহার ময়ুম গ্রামের রসুলপুরের কৃষকগন সহিদুল আঃ মতিন গোলাম রব্বানি জাহেদুল অভিযোগ করে বলেন, বেশি দামেও মিলছেনা সার। তাই এখন পর্যন্ত আলু চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। স্থানীয় সারের সাব-ডিলারদের কাছে বস্তায় গত বছরের তুলনায় ২০০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি। অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলেও কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে না পাকা রসিদ।
একই এলাকার লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর আলু চাষাবাদে ইচ্ছুক। তবে এখন পর্যন্ত সার না পাওয়ায় দুশ্চিন্তাই আছি। কৃষকের এসব অভিযোগের বিষয়ে মামুদপু চৌহমনী বাজারের সারের ডিলার লিটন সুজাউল চৌধরী সাকিলুর তারা বলেন উপর থেকেই সারের সংকট৷
কৃষকদের অভিযোগ, ডিলারদের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও সারের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। কৃষকরা বলছেন, ডিলাররা গুদামে সার রেখে বলছেন সার নেই। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন তারা। তবে কৃষকদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সার ব্যবসায়ী ও ডিলাররা বলেন, জয়পুরহাট সার গোডাউন থেকে চাহিদার তুলনায় সার সরবরাহ করা হচ্ছে না। তাই সারের এই সংকট তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাদের কোনো হাত নেই। এছাড়া সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কোনো বাড়তি টাকায় সার বিক্রি করা হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তারা।
কৃষিকাজে শীতের সময়টাকে রবি মৌসুম হিসেবে
ধরা হয়। নভেম্বর থেকে মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত সময়কে রবি মৌসুম বলা হয়। এ সময়ে যেসব শস্য বা ফসলের চাষাবাদ করা হয় এদের রবিশস্য, রবি ফসল বা চৈতালি ফসল বলে।
রবি মৌসুমেও অনেক ধরনের ফসল চাষাবাদ করা হয়। বোরো ধান, গম, মসুর ডাল, যব, সরিষা, পেঁয়াজ, মটরশুঁটি ইত্যাদি ফসলকে এ মৌসুমের প্রধান শস্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ ছাড়া ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, লাউ, শিম, টমেটো ও আলু ইত্যাদি এ মৌসুমে চাষ করা হয়।
অথচ কৃষি উৎপাদনে খরচ কমানোর জন্য সরকার ডিএপি সারের দাম কেজিপ্রতি ১৬ টাকা নির্ধারণ করেছে। খুচরা বিক্রেতা ডিলারের কাছ থেকে কিনবেন ১৪ টাকায়। টিএসপি খুচরা বিক্রেতা (ডিলারের কাছে) কিনবেন ১৪ টাকা কেজি। কৃষক কিনবেন ২২ টাকায়। এমওপি খুচরা বিক্রেতা ১৩ টাকায় আর কৃষক কিনবেন ১৫ টাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলায় সারের কোন সংকট নেই। তাছাড়া ন্যায্য মূল্যে কৃষকেরা যেন সার পায় একারনে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও তদারকি করা হচ্ছে। যদি কোন ডিলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এবছর উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রন করা হয়েছে।