রাজনীতি ডেস্ক : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘৯১ এবং ৯৬ সালে জেলে থেকে নির্বাচন করার কারণে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারি নাই। এরপর জোটবদ্ধ নির্বাচনের কারণে একযুগের বেশি সময় ধরে দেশের দুই শতাধিক এলাকায় লাঙ্গল শূন্য। ওইসব এলাকায় মানুষ লাঙ্গল প্রতীক ভুলতে বসেছে। তাই এ লাঙ্গলকে আবার জাগ্রত করতে সারা দেশে লাঙ্গলের চাষ করতে হবে।’
বুধবার বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে জাতীয় পার্টির নবনিযুক্ত কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় যুব সংহতির উদ্যোগে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘যে দল নয়টি বছর দেশ পরিচালনা করলো, সেই দলটি পৌর নির্বাচনে মাত্র একটি আসন পায়। শোচনীয় এ পরাজয়ে লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে আসে।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে সাধারণ মানুষ আপনাদের ভোট দেয় নাই। ভোট দিবো কেন? আপনারাতো সরকারেই অংশ। আপনাদের ভোট দিয়ে লাভ কী? কিন্তু একটা সিদ্ধান্তে মানুষ এখন আমাদের নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। একটি ঘোষণাই আজ সারাদেশে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। মৃত প্রায় জাতীয় পার্টি আবার জেগে উঠেছে। জিএম কাদেরকে আমার যোগ্য উত্তরসূরি করায় দলের কর্মীসহ দেশবাসীও আজ উৎফুল্ল। জিএম কাদের আমার চেয়ে অনেক বেশি লেখা-পড়া করেছে। জিএম কাদের আমার ভাই, এই ভেবে আমি গর্ববোধ করি।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মিশন ১৫১। এতদিন মনে হয়েছিলো সম্ভব নয়, এখন মনে হচ্ছে সম্ভব।’
এরশাদ বলেন, ‘মানুষ এখন অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি চায়। জাতীয় পার্টি কোনো টেন্ডারবাজি করে নাই, কারো জমি দখল করে নাই, মানুষ খুন করে নাই। আমরা যদি মানুষকে সঠিক রাজনীতি দিতে পারি অবশ্যই জনগণ আমাদের পাশে থাকবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অনেক স্বার্থপর আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আর যারা আমার সাথে আছো তারাই সত্যিকারের জাতীয় পার্টি। ভবিষতে তোমাদের হাতেই পার্টি ভার তুলে দিবো। আমাদের মাঝে আর কোনো বিভেদ নাই, আমরা এক এবং অভিন্ন।’
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের তার বক্তব্যে বলেন, ‘কোনো পার্টির যদি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না থাকে তাহলে এই পার্টি নির্বাচনে জয়ী হতে পারে না। আমরা জনগণের পার্টি হতে চাই। দেশের জনগণ আজ অস্থিরতায় ভুগছে। দেশের রাজনীতি স্থিতিশীল হয়ে আছে। যা জাতির জন্য সুখকর নয়। আমরা জাতীয় পার্টি যদি সঠিক পথে চলতে না পারি তাহলে শুধু দলীয় নেতাকর্মীরাই নয় জনগণকেও মাসুল দিতে হবে।’
জাতীয় যুব সংহতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, সাইদুর রহমান টেপা, এসএম ফয়সল চিশতি, হাজী সাইফুদ্দিন মিলন, জহিরুল আলম রুবেল ও বেলাল হোসেন প্রমুখ।