নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
আজ ৭ জানুয়ারি। সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ৭ বছর। ২০১১ সালের এই দিনে ভারতীয় রক্ষী বাহিনী বিএসএফ-র গুলিতে নির্মম হত্যাকান্ডের শীকার হয় কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুর-ইসলামের মেয়ে কিশোরী ফেলানী। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারী শুক্রবার ভোর ৬টা ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফ’র গুলিতে বিদ্ধ হয়ে আধাঘন্টা ধরে ছটফট করে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর। এর পর সকাল পৌনে ৭টার থেকে নিথর দেহ কাঁটাতাঁরের উপর ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘন্টা। এঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগষ্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফ এর এ কোর্টে স্বাক্ষীদেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামী অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফ এর বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাক্ষান করে পুন:বিচারের দাবী জানায় ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পূর্ন:বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ০২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস¦ীকৃত আসামী অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানী শুরু হয়। ২০১৬ সালে দুইবার শুনানী পিছিয়ে যায়। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ৯ নং আদালতে বিচারপতি রামায়ন ও বিচাপতি অমিতাভ রায়ের যৌথ বেঞ্চে তালিকার ২৪ নম্বরে থাকা মামলাটি গেল বছর (২০১৭) ৮ সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যা রীট পিটিশনের শুনানীর দিন ধার্য থাকলেও তা পেছায় ২৫ অক্টোবরে। ২৫ অক্টোবরের শুনানি আবারও ধার্য করা হয় চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারী। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার না পেয়ে হতাশ ফেলানীর বাবা- মা এবয় স্বজনরা।
ফেলানীর বাবা নূর- ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম জানান, ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় আছি আমরা। বিএসএফ অমিয় ঘোষের শাস্তি হলে আমাদের মেয়ের আত্মা শান্তি পেত। আমরাও মনকে শান্তনা দিতে পারতাম।
এ নির্মম হত্যার ন্যায় বিচার নিয়ে সন্দিহান ফেলানীর স্বজনরা। ফেলানীর ছোট বোন মালেকাবানু জানায়, ফেলানী আমার বড় বোন ছোটবেলা অনেক সুখের স্মৃতি এখন ম্লান। তার হত্যার সুষ্ঠুবিচার আমি চাই।
ফেলানী হত্যা মামলার ফেলানীর বাবাকে সহয়তাকারী আইনজীবি এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড.এস,এম,আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতের সর্বচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যার বিষয়ে দুটি রীটপিটিশন শুনানী চলমান রয়েছে। আগামী ১৮জানুয়ারি দু’টি রীটেরই শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে।যেহুতু ভারতের সর্বচ্চ আদালত শুনানী শেষে রীট আমলে নিয়ে শুনানীর কার্যক্রম শুরু করেছে সেহুতু ফেলানীর পরিবার ন্যায় বিচার পাবেন বলে বলে আমি মনে করি।