বিজয় রায় ঃ মোছাঃ সুমী কাউসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ষষ্ঠ শেণি থেকে উপজেলার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে আসছে। এখন সে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছেনা। বাবা একজন চায়ের দোকানদার। মাস পাঁচেক আগে বার্ধক্য জনিত সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারনে দোকানে আসা সম্ভব হয়না। সুমী কাউসারকে এখন নিয়মিত সারা দিন দোকানে চা বিক্রী করতে হয়। যা আয় রোজগার হয় বাবার অভাবি সংসারে খরচ যোগাতে হয় পাশাপাশি যোগান দিতে হয় বাবার চিকিৎসার । সমস্ত খরচ চালাতে হয় দোকানের আয় থেকে। এখন সুমীর উপার্জনে এসব খরচ করতে হয়।
সুমী উপজেলা শহরেরর পুরাতন গুদড়ী বাজারের আঃ সামাদের মেয়ে। বাবার দুই মেয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বুক ভরা আসা নিয়ে পড়ালেখা শুরু করলেও বাবার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারনে তার পড়ালেখা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যে সময় স্কুলে সহপাঠিদের সাথে হেঁসে খেলে আনন্দ উল্লাসের মাঝে পড়ালেখার সময় কাটার কথা এখন তাকে সে সময় পার করতে হয় সংসারের দ্বায় ভারের কথা চিন্তা করে চায়ের দোকানে।
সহজ সরল মেয়ে সুমী। সংসারের কথা ভেবেই তাকে স্কুলে না গিয়ে দোকানে চলে আসতে হয় প্রতিদিন। কপালে যেন চিন্তার নেয় কোন শেষ। কেমন করে বাবা সুস্থ হবে। সংসারের অভাব দুর হবে কিভাবে। কেটলি আর কাপে চা তৈরীর সময় এমন নানা প্রশ্ন এসে ঘুর পাক খায়। তাতে কি ! কাষ্টমারের চাহিদা মেটাতে দিনরাত চা বিক্রীর কাজ চালাতে হয় তাকে। জীবন যুদ্ধের পাশাপাশি সংসার যুদ্ধ যে তার কাঁধে এসে পড়েছে। তার বাবা আগের তুলনায় কিছুটা আরাম বোধ করলেও দোকানে বসতে পারছেন না। তাই সংসারের কথা ভেবে পৌর শহরের মুুক্তা সিনেমা হল চত্বরের চায়ের দোকান সুমীকেই চালাতে হয়।
কথা হয় সুমী কাউসারের সাথে। সে জানায় পড়ালেখা শিখে একজন স্কুল শিক্ষিকা বা ভাল কোন চাকুরী নিয়ে বাবাকে সহযোগিতা করবে। কিন্তু বাবা প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে দোকানে আসতে পারেননা। দোকান আমাকেই সামলাতে হয়। দোকান শেষে বাড়ি গিয়ে পড়ালেখা করি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা স্যার আমাকে উৎসাহ যোগাচ্ছেন পড়ালেখা বন্ধ না করার জন্য। তিনি পড়ালেখার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
সুমীর বাবা আব্দুস সামাদ জানান, আমি প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ মাস যাবৎ দোকান চালাতে পারছিনা। আমার মেয়েটি দোকান চালিয়ে সংসার আর চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছে। মেয়েটি না থাকলে যে কি অসুবিধা হতো বলার কিছু নেয়। তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। প্রয়োজনে বিকাশ ০১৭৯৪৮২১০৩০।
সুমী আমার আপনার সকলের মেয়ে। অভাবি সংসারে অসুস্থ পিতার চিকিৎসার্থে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে মানুষ মানুষের জন্য এমন প্রত্যয় গড়ে তুলি। এমন শ্লোগান হোক আমাদের সবার অঙ্গিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *