ভূরুঙ্গামারী(কুড়িগ্রাম)সংবাদদাতাঃ
মানসিক ভারসাম্যতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে মাঝে মাঝে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় খোকনকে। সে আগের মত নেই । এখন মানসিক রোগী। এ থেকে মুক্তি চান তার পরিবারটি।
কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাটেশ্বরী হাই স্কুলের পূর্ব পাশে বেলদহ গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে খালেকুজ্জামান খোকন (৩০)। বাবা আমজাদ হেসেন তিনি পাটেশ্বরী বাজারে সবজী বিক্রেতা। প্রতিদিন বিকেলে সবজি বিক্রি করে তার সংসার চলে। তিন ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে খালেকুজ্জামন খোকন বড় সন্তান। খোকন এক সময় ভালো ছিল। গত দেড় বছর থেকে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়। টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ। স্বামীর চিকিৎসা পেতে কুড়িগ্রামের ডিসি‘র প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন খোকনের স্ত্রী আফরোজা।
খোকনের স্ত্রী আফরোজা জানায়, দেড় বছরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। যেটুকু সম্পদ ছিলো তা ফুরিয়ে গেছে। এখন শ্বশুড় বাড়িতে সন্তান নিয়ে অসহায় দিনাতিপাত করছি। ২/১ মাস থেকে টাকার অভাবে তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। আমার স্বামীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে সুস্থ করে পরিবারের হাসি ফুটাতে ডিসি সারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। সেই সাথে সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।
খোকনের বাবা আমজাদ হোসেন জানায়, আমার ছেলে ৫ম শ্রেণী পাশ করেছ্।ে তার ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান আছে। ছেলেটি পাটেশ্বরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনির ছাত্র। মেয়েটির বয়স প্রায় তিন বছর। এক সময় খোকন উপার্জন করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে ছিলো একটি সুখের সংসার।
গত দেড় বছর থেকে তাদের সংসারে নেমে আসে দুঃখ। ২৪ ঘন্টার মধ্যে সে ১ ঘন্টাও ঘুমায় না। সারা সময় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চলাফেরা করে। সবাই তাকে এখন পাগল বলে। এ দুঃখের শেষ হবে করে তা জানে না এ পরিবারটি।
এলাকাবাসী জানায়, খোকনের জন্য আমাদের খুব মায়ালাগে। এত সুন্দর ছেলেটা আজ তার এ অবস্থা । আমরা সবাই খোকনকে ভালোবাসি। তাই আমাদের ডিসি স্যার যদি খোকনের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন তাহলে ছেলেটির পরিবার আগামী দিনের সুখ খুঁজে পাবে।
জানা গেছে, খোকনের বাবা এক সময় এরকম মানসিক রোগী ছিলো। কিছুদিন ভালো থাকার পর আবারও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতো। ১৯৯৪ সালে হঠাৎ শুরু হয় এ মানসিক রোগ। ১৯৯৮ সালে এসে ভালো হন তিনি। চার-পাঁচ বার এরকম হয়েছিল তার। তখন তিনি ৭০-৮০ হাজার টাকা খরচ করে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়। এলাকার অনেকেই এখন বলছে বাবার মানসিক রোগ এখন তার ছেলেকে ধরেছে।