বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত তারামন বিবির (৬৫) শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটেছে। তার দীর্ঘদিনের পুরাতন শ্বাসকষ্ট সঙ্গে কাশি আবার জেগে উঠেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে পিঠের জ্বালাযন্ত্রণা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ওই অবস্থার আরো অবনতি ঘটে গতকাল সোমবার। এ অবস্থায় দ্রুত তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয় দুপুর আড়াইটার দিকে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. নাসির উদ্দিন মঙ্গলবার সকালে জানান তাকে করোনারীকেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।
তারামন বিবির ছেলে আবু তাহের জানিয়েছেন, এখানে রাখার পর কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। এর আগে স্পষ্ট করে কথা বলতে পারতো না। চিকিৎসকদের চিকিৎসা দেয়ার পর তিনি কথা বলতে পেরেছেন। তবে যখন শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় চলে বেশ কিছুক্ষণ ধরে। শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি উঠলে তখন অক্সিজেনের সাহায্য নিতে হতো।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার আগের দিন তার বাড়িতে কথা হয় তারামন বিবির সঙ্গে। এসময় তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে মনে হয় আমার সময় শেষ হয়ে আসছে। শরীরের যা অবস্থা। শ্বাস নিতে পারি না। যখন কাশি ওঠে মনে হয় দুনিয়াত আর নেই আমি। সারা পিঠ যেন জ্বলে। উঠে দাঁড়াতে পারলেও হাঁটতে পারি না। তিনবেলা ওষুধপত্র খাওয়ার পরও অসুখের কোনো উন্নতি দেখছি না। খুবই কষ্ট হচ্ছে আমার।’
এর আগে তারামন বিবি পুরো জানুয়ারি মাস রংপুর সিএমএইচ (সেনা ক্যান্টমেন্ট হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারি রংপুর থেকে নিজের বাড়িতে ফেরেন। বাড়িতে এক সাপ্তাহ কিছুটা সুস্থ থাকলেও হঠাৎ করে তার অসুস্থতা বৃদ্ধি পায়।
রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন জানান, তার শ্বাসকষ্ট সঙ্গে কাশিটা অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডার তার বাড়িতে দেয়া হয়েছিল তাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেনের সহযোগিতা নিতে পারে।
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামে বসবাস করেন তারামন বিবি। তারামন বিবির স্বামী আব্দুল মজিদ জানান, বর্তমানে তার শরীরের যে অবস্থা তা এর আগে কখনও দেখা দেয়নি। দিনরাত বিছানা শুয়ে বসে থাকতে হয়েছে। নিজে নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না তিনি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হাই সরকার জানান, তার অবস্থার অবনতি ঘটনার কারণে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।