মোহাম্মাদ মা‌নিক হো‌সেন চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রাণীরবন্দরের ক্ষুদ্র শিল্পের মিনি কারখানার তৈরি রিক্সাভ্যান সমগ্র দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলার রাণীরবন্দর সুইহারী বাজারের খানসামা সড়কে বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র মিনি শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এ সব মিনি কারখানায় রিক্সাভ্যানের অধিকাংশ যন্ত্রাংশ যেমন, চেসিচ, খুঁটি, স্প্রিং, সিট টানা,ব্যাড টানা,চেসিচ, প্লেট ও চাঙ্গী তৈরি করে পূর্ণাঙ্গ রিক্সাভ্যান তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে ওই রিক্সাভ্যানে চার্জার ব্যাটারি লাগিয়ে আরো আধুনিক করা হচ্ছে। রাণীরবন্দরের তৈরি রিক্সাভ্যান দিনাজপুর জেলাসহ সমগ্র দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানকার তৈরিকৃত রিক্সাভ্যান অন্য এলাকার তৈরি রিক্সাভ্যানের চেয়ে ভিন্ন রকম।
ষাট অনুর্ধ্ব রিক্সাভ্যান চালক মো: আফতাব উদ্দিন বলেন, আমাদের রাণীরবন্দরের তৈরি রিক্সাভ্যানের (চাঙ্গী) বসার আসনটি চওড়া। তাই লোক ও মালামাল বহন খুব সহজ। তৈরি সময় যে যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয় তা উন্নতমানের, সহজে ব্যবহার করা যায়, শক্তি ও লাগে কম।
রিক্সাভ্যান তৈরি কারিগর (মেকার) মো. ইব্রাহীম ইসলাম জানান, বৃহত্তর রাণীরবন্দরে ১৫ জনেরও বেশি কারিগর রয়েছে। ওই প্রতি জনের সাথে ২ থেকে ৩ জন সহকারী রয়েছে। এই ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ৬টি পাশের দোকান, চাঙ্গী তৈরির জন্য ৫টি কাঠের দোকান, চেসিচ তৈরির জন্য ৩টি ও খুটি,স্প্রিং, সিট টানা ব্যাড টানার প্রায় ৪ থেকে ৫টি ক্ষুদ্র মিনি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার সাথে প্রায় শতাধিক বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত। বর্তমানে একটি রিক্সাভ্যান তৈরি করতে ৩৫ হাজার থেকে ৩৮ হাজার টাকা লাগে। রাণীরবন্দরের তৈরি রিক্সাভ্যান শুধু দিনাজপুর জেলায় জনপ্রিয় নয়, দেশের জয়পুরহাট,ময়মনসিংহ, জামালপুর, নীলফামারী, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব এলাকার রিক্সাভ্যান মালিক ও চালকরা এসে রিক্সাভ্যান তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছে। চেসিচ তৈরির ক্ষুদ্র কারখানার মালিক মাহাবুবুর রহমান ও মনসুর আলীর সাথে কথা হলে তারা জানান, আমরা যারা এ শিল্পের সাথে জড়িত তারা সবাই বিভিন্ন ভাবে অর্থ সংগ্রহ করে কোন রকম এ শিল্পকে টিকে রেখেছি। যদি সরকারি ভাবে সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করা হয় তা হলে এ শিল্পকে আরও প্রসার করা সম্ভব হবে এবং এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রসার লাভ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *