হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ ও ভুটান সরকারের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ ‘অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কুড়িগ্রামে ১০মার্চ ভুটান সরকারের একটি প্রতিনিধি দল দুই দিনের সফলে আসছেন বলে জানা গেছে। শনিবার ৯ মার্চ সকালে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মুশফিকুল আলম হালিম।
জানা গেছে, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাধবরাম মৌজার অন্তর্ভুক্ত ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে। ধরলা সেতুর পূর্ব প্রান্তে প্রয়োজনে ওই স্থানে অবস্থিত আরো জমি অধিগ্রহণেরও সুযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। এই এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ-ভুটান সরকারের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। এছাড়াও জেলার সোনাহাট স্থল বন্দরের কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। এতে জেলার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমৃদ্ধ হবে। এদিকে ২০২৩ সালের মে মাসে লন্ডনে ভুটানের রাজা ও রানির সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় সভায় কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভুটান সরকারের একটি প্রতিনিধি দল আগামীকাল কুড়িগ্রাম সফরে আসছেন। চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এইচই মি. রিনচেন কুয়েন্টসিল। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ভুটানের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকবেন বলে সফরসূচি সূত্রে জানাযায় । তারা প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থানসহ সোনাহাট স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌবন্দর পরিদর্শন করবেন।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ১৩৩ দশমিক ৯২ একর খাস জমি বেজা কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দোবস্ত দিয়েছি। আরও ৮০ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুশফিকুল আলম হালিম বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার বৃহৎ এলাকা চরাঞ্চল। এ অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য জেলায় কলকারখানা প্রয়োজন। এখান থেকে যেহেতু ভুটান অনেক কাছে সেহেতু ভুটানের সঙ্গে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে পারলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত গতিতে বাড়বে। মানুষের সক্ষমতা বাড়বে, আগের চেয়ে ভালো জীবনযাপন করতে পারবে। সরকার সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ভারত ও ভুটানের কানেক্টিভিটি বেশ ভালো। কুড়িগ্রামের দুটি স্থলবন্দর ও চিলমারী নৌ-বন্দরের সঙ্গে ভুটানে যোগাযোগ সুবিধা রয়েছে। বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল, কাঁচামাল তৈরির সম্ভাবনা এবং মানবসম্পদ মিলিয়ে কুড়িগ্রামে যৌথ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে বলে সরকার মনে করছে।
![](https://asianbanglanews.com/wp-content/uploads/2024/03/IMG_20240309_105206.jpg)