ঢাকা সংবাদদাতাঃ
আগামীকাল ১৩ আগষ্ট, ২০১৭ স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারী, জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ঘনিষ্ট সহকর্মী-সহযোদ্ধা, বরেণ্য রাজনীতিক, সাংবাদিক, এনডিপি’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী জননেতা আনোয়ার জাহিদ-এর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী।
দেশ বরেণ্য এই নেতা ছাত্রজীবনে নিখিল পূর্বপাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ছাত্রলীগের ঝিনাইদহ মহকুমার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৫২ ভাষা আন্দোলনে ঝিনাইদহে ছাত্রআন্দোলন গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৫৪ সালে পাকিস্থান ছাত্র ইউনিয়নে যোগদান করেন। ৫৬ সালে রাজশাহী সরকারী কলেজের ভিপি নির্বাচিত হন। ৫৭ সালে পূর্বপাকিস্তান যুবলীগের সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। ৬১ সালে রাজবন্ধী হিসেবে গ্রেফতার হন।
৬২ সালে ছাত্ররাজনীতি থেকে বিদায় নেন এবং সাংবাদিকতা জীবনে প্রবেশ করেন। প্রখ্যাত আইনজীবী কামরুন নাহার লাইলীর সাথে রাজবন্দী অবস্থায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকে এই মহান নেতার বিবাহ কার্য্য সম্পাদন করা হয়, কারণ বিবাহের দিন তারিখ ঠিক হলেও তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। ৬৫ সালে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। একই সালে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধিন ন্যাপ‘র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ৬৮ সালে ন্যাপ‘র যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৯ এর গণআন্দোলনে গরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় অনন্য অবদান রাখেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সরকারের তথ্যমন্ত্রী, শ্রম ও কর্মসংস্থান, ত্রান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি‘র চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়াপার্সনের তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। ৭ দলীয় এবং ৪ দলীয় জোট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ রূপকারের ভূমিকা পালন করেন।
সাংবাদিক হিসাবেও আনোয়ার জাহিদ অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯ বছর বয়সে দৈনিক ইত্তেহাদের সহকারী সম্পাদক, ৫৮ সালে অর্ধ সাপ্তাহিক ধূমকেতুর সহকারী সম্পাদক, ৫৯ সালে দৈনিক সংবাদের সহকারী সম্পাদক, ৬০ সালে দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী সম্পাদক, ৬৩ সালে ইংরেজী সাপ্তাহিক হলিডেষ্ঠর উপ-সম্পাদক, ৭০ সালে সাপ্তাহিক গণবাংলার নির্বাহী সম্পাদক, ৭২ সালে ইংরেজী ডিইেলী পিপলস-এর বার্তা সম্পাদক হিসাবে বাংলাদেশ টাইমস’র গুরুত্বপূর্ণপদে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ তিনি ইনকিলাব টেলিভিশন (আইটিভি)-প্রধান নির্বাহী ও দৈনিক ইনকিলাবের উপদেষ্টা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিক জীবনে আনোয়ার জাহিদ শুধু সাংবাদিকতাই করেননি সাংবাদিকদের নেতৃত্বও দিয়েছেন। ৬২, ৬৩, ৬৪ সালে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)-এর সাধারন সম্পাদক, ৬৫, ৬৬ সালে সহ-সভাপতি ও ৭৮, ৮৩ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
জননেতা আনোয়ার জাহিদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল মীরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাঁর কবরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পন ও ফাতেহা পাঠ করবেন। মরহুমের কর্মময়জীবন নিয়ে ১৮ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১০টায় ডিআরইউ সাগর-রুনি মিলনায়তনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি’র উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে আজ ১২ আগস্ট বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ‘এর উদ্দ্যোগে স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।