– মনজুরুল ইসলাম

বিভিন্ন জাতীয় পত্রপত্রিকায় তথ্যানুসারে এবং অর্থমন্ত্রীর ভাষ্যমতে আবারও ঋণ খেলাপীর পরিমান ২লক্ষ ২ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা। তার মধ্যে অর্থ আদায় হয়েছে ৩ হাজার ১৫২ কোটি। প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে ্ঋণ আদায় করেছে সোনালী ব্যাংক ১০৬২৯ কোটি টাকার মধ্যে ৬২৩ কোটি,জনতা ব্যাংক ৬৫১০ কোটি টাকার মধ্যে ২৫৪ কোটি,অগ্রনী ব্যাংক ৬০৮৬ কোটি টাকার মধ্যে ৪৮৩ কোটি,রুপালী ব্যাংক ৪২৬৪ কোটি টাকার মধ্যে ৩২৮ কোটি ,বেসিক ব্যাংক ৭৩৭৪ কোটির মধ্যে ১৫০ টাকা,বিডিএল ৮৫৪ কোটি টাকার মধ্যে ১৩০ কোটি,কৃষি ব্যাংক ৪৬৭৯ কোটি টাকার মধ্যে ৯৩০ কোটি এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১০০৫ কোটির মধ্যে ২২৩ কোটি টাকা আদায় করেছে মাত্র। ব্যাংকের ঋণের টাকার সিংহ ভাগ টাকাই একশ্রেনীর সুবিধা ভোগীরা পেয়ে থাকে। এদেশের মেহনতি মানুষের ভাগ্যে ঋণের নামে জুটছে পান্তা আর কাচা মরিচ। অথচ যাদের টাকায় ঋণ সুবিধা দেওয়া হয় তাদের জীবনের মান পরিবর্তনের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হয়না আবার এরা কেউ ্ ঋণ পেলেও এদের নাম ঋণ খেলাপীর তালিকায় পাওয়া যায়না। বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক ও যুব উন্নয়ন নামে সরকারী বেসরকারী সংস্থা থাকলেও এরা নামে মাত্র কাজ করে শর্তে ভরা ,ঘুষ হয়রানী ,দলীয় করণ ছাড়া নাম মাত্র ্ঋণ সুবিধাও পাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা।
ঋণ খেলাপীর তালিকায় গ্রামীণ ব্যাংকের নাম না থাকলেও গ্রামীণ ব্যাংকের শুরু থেকে বিগত দিনে ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতার আত্মবলির উদাহরণও আছে । অপরদিকে যারা শত হাজার কোটি টাকা ঋণ সুবিধা নিয়ে দীর্ঘদিনে ঋণ খেলাপীর খাতায় লিপিবদ্ধ হয়। এক সঙ্গে এত টাকা কোন আইনে কেন ঋণ সুবিধা পায় এটা দেশবাসীর জানার অধিকার থাকলেও রাজনৈতিক কারনে তা জানা যায় না। আবার ঐ ঋল খেলাপীকে ঋনের টাকা আদায় না করে পুনর্বাসনের জন্য পুনরায় ঋণ সুবিধা দিয়ে খেলাপী ঋনের পরিমান আরও বাড়ানো হচ্ছে। আজকাল প্রায়ই দেখা যায় দেশের বাইরে অর্থ পাচারকারীদের মধ্যে অধিকাংশই ঋণ খেলাপী। এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে ব্যাংক গুলোও দেউলিয়া হওয়ার সম্ভবনা ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটা কথা সকলেরই জানা উচিৎ ঋণ খেরাপীদের দেশের প্রতি যে কোন রকম ভালবাসা নেই তা অনেকদিন আগেই প্রমানিত হয়েছে। কি কারনে ঋন খেলাপী হয় তার দেখভাল এবং সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যাও রাষ্ট্রের কাছে নেই। দেশের টাকার মালিক যেগেতু জনগন তাই ঋণ খেলাপীর তালিকাসহ ব্যাখ্যা জনগনের জানার অধিকার । দেশের জনগন তা দেখতে চায়। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে সরকারী খাস জমির কাগজপত্র দেখিয়ে হোটেল রুপসী বাংলার সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে হল মার্ক কোম্পানী ঋণ সুবিধার নামে যে মোটা অংকের ৪ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও তার কোন খোজ খবর বর্তমানে আর দেখা যাচ্ছে না। দলমত নির্বিশেষে ঋণ খেলাপী যেই হউক না কেন আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। আইনের যথেচ্ছা ব্যবহার না করে বছরের পর বছর ্ঋণ খেলাপীদের জামাই আদরের মাধ্যমে পুনরায় ঋণ সুবিধা দেয়ার কোন মানেই হয়না। বড় অংকের শর্ত ভঙ্গকারীর সাথে আর যাই হউক দেশের জনগনের সম্পদ পুঁজির ব্যবসা হতে পারেনা। দেশের ভিতরে বৈষম্যহীন অর্থেন সঠিক বিনিযোগের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সরকারের কর্তব্য।
@@@
লেখক,সাংবাদিক,গবেষক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *