রংপুর প্রতিনিধি.
ভিশন ২০৩০ দিয়ে বসে নেই বিএনপি। একটি সহায়ক সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন আদায় করতে আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি বিএনপির হাইকমান্ড ইতোমধ্যেই সারা দেশে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় তৈরি করছেন। বিশেষ করে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৩৩টি সংসদীয় আসনে দলীয় সঠিক ও যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে চায়। এ জন্য ৭৩ জনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা তৈরি করেছে বিএনপির হাই কমান্ড। বিএনপির কেন্দ্রীয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ তালিকায় সংযোজন-বিয়োজন করা হবে বলে সূত্র জানায়। সূত্র মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি এরই মধ্যে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে ৭৩ জন নেতার তালিকা করেছে। তারা হচ্ছেন রংপুর-১ গঙ্গাচড়া আসনে উপজেলা সহসভাপতি ওয়াহেদুজ্জান মাবু, মোকাররম হোসেন সুজন ও কামরুজ্জামান লিপটন চেয়ারম্যান; রংপুর-২ বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ আসনে বদরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি সাবেক সংসদ পরিতোষ চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শাহান, রংপুর মহানগর যুবদল সভাপতি মাহফুজ উন নবী ডন, পৌর সাধারণ স¤পাদক মো: কমল লোহানী; রংপুর-৩ সদর আসনে মহানগর সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা সামসুজ্জামান সামু, সহসভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল কাইয়ুম; রংপুর-৪ কাউনিয়া-পীরগাছা আসনে কাউনিয়া উপজেলা সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা, উপজেলা চেয়ারম্যান আফসার আলী, জেলা সহ-সভাপতি কর্নেল (অব:) আবদুল বাতেন, জেলা কৃষক দলের সভাপতি হাজী তাহের; রংপুর-৫ মিঠাপুকুর আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা সভাপতি এ কে এম রুহুল উল্লাহ জুয়েল, ছাত্রদল উপজেলা সাবেক সভাপতি খাজা নুর খাজা; রংপুর-৬ পীরগঞ্জ আসনে কেন্দ্রীয় সদস্য নুর মোহাম্মদ মণ্ডল, জেলা সভাপতি সম্পাদক সাইফুল ইসলাম; নীলফামারী-১ ডোমার-ডিমলা আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম তুহিন অথবা তার বাবা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী; নীলফামারী-২ সদর আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান, জেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক সোহেল পারভেজ, পৌরসভা শাখার সভাপতি জহুরুল ইসলাম; নীলফামারী-৩ জলঢাকা-আংশিক কিশোরীগঞ্জ আসনে রংপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সামসুজ্জামান সামু, জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র ফাহমিদ ফয়সাল কমেট চৌধুরী; নীলফামারী-৪ সৈয়দপুর-আংশিক কিশোরীগঞ্জ আসনে কণ্ঠশিল্পী ও জাসাস নেত্রী বেবী নাজনীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম ও সৈয়দপুর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন সরকার; পঞ্চগড়-১ পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া-আটোয়ারী আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।
পঞ্চগড় : পঞ্চগড় সদরের পৌর মেয়র মো: তৌহিদুল ইসলাম; পঞ্চগড়-২ বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা আসনে ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান একক প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুতে এ তালিকায় এখন স্থান পেতে যাচ্ছেন যুবদল নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের স্ত্রী অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, কন্যা ব্যারিষ্টার তাসনিমা প্রধান, এ ছাড়া বিকল্প প্রার্থী হিসেবে পঞ্চগড় ১ ও ২ আসনে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের নাম রয়েছে; ঠাকুরগাঁও-১ সদর আসনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের একক প্রার্থী; ঠাকুরগাঁও-২ বালিয়াডাঙ্গী-হরিপুর আসনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নির্বাহী কমিটির সদস্য জেড এম মর্তুজা চৌধুরী তুলা, ড্যাবের সহসভাপতি ডা: আবদুস সালাম; ঠাকুরগাঁও-৩ পীরগঞ্জ-রানীশংকৈইল আসনে পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুর রহমান জাহিদ, সহসভাপতি জামান চৌধুরী ও উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া।
দিনাজপুর : দিনাজপুর-১ বীরগঞ্জ-কাহারোল আসনে বীরগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, কাহারোল উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সুমন; দিনাজপুর-২ বিরল-বোচাগঞ্জ আসনে স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান একক প্রার্থী; দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনে দিনাজপুর পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও খালেদা জিয়ার বড় বোনের ছেলে তাহাসিন আখতার ডন; দিনাজপুর-৪ খানসামা-চিরিরবন্দর আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আখতারুজ্জামান মিয়া; দিনাজপুর-৫ ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রেজওয়ানুল হক, ফুলবাড়ী উপজেলা সভাপতি অধ্যপক খুরশিদ আলম মতি; দিনাজপুর-৬ বিরামপুর-হাকিমপুর-নবাবগঞ্জ-ঘোড়াঘাট আসনে জেলা সাবেক সভাপতি অধ্যাপক লুৎফর রহমান মিন্টু।
লালমনিরহাট : লালমনিরহাট-১ পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা আসনে হাতীবান্ধা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন, জেলা সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান; লালমনিরহাট-২ আদিতমারী-কালীগঞ্জ আসনে কালীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি সালেউদ্দিন মো: হেলাল, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম; লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক স¤পাদক আসাদুল হাবিব দুলু একক প্রার্থী।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম-১ নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা, নাগেশ্বরী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাসেম সরকার; কুড়িগ্রাম-২ কুড়িগ্রাম সদর-ফুলবাড়ী আসনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, জেলা সহসভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক, শফিকুল ইসলাম লেবু, জেলা যুগ্ম সম্পাদক সোহেল হোসাইন কায়কোবাদ; কুড়িগ্রাম-৩ উলিপুর আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি তাজভির উল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল খালেক; কুড়িগ্রাম-৪ রৌমারী-রাজিবপুর-চিলমারী আসনে রাজিবপুর উপজেলা সভাপতি মোখলেছুর রহমান, রৌমারী উপজেলা সভাপতি আজিজার রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিনু।
গাইবান্ধা : গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে সাবেক পিপি ও গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মো: জাহাঙ্গীর আলম জিন্নাহ; গাইবান্ধা-২ সদর আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো: আনিছুজ্জামান খান বাবু, জিয়া পরিষদ নেতা খন্দকার আহাদ আহম্মেদ; গাইবান্ধা-৩ সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি ডা: মো: মইনুল হাসান সাদিক, সাবেক ছাত্রনেতা ড. মিজানুর রহমান মাসুম, বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা মো: রফিকুল ইসলাম রফিক; গাইবান্ধা-৪ গোবিন্দগঞ্জ আসনে উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো: আবদুল মান্নান, উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা চেয়ারম্যান মো: ফারুক কবীর আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম; গাইবান্ধা-৫ ফুলছড়ি-সাঘাটা আসনে জেলা বিএনপি সদস্য মো: হাসান আলী, সাঘাটা উপজেলা বিএনপি সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও শিল্পপতি নাজমুল ইসলাম নয়ন।

সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকার ব্যাপারে বিএনপির রংপুর সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু জানান, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় নির্বাচনের মাধ্যমে। সেজন্যই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি সঠিক ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত ছাড়াও যাছাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। তিনি বলেন, এবার আন্দোলনের মাধ্যমে সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনও হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়ে জনগণের ম্যান্ডেট পাবে ইনশাল্লাহ।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *