মোঃ রফিকুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম :
রৌমারী, রাজীবপুর ও চিলমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত মহান জাতীয় সংসদের ২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) এর সম্ভাব্য ৩ এমপি প্রার্থী এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।
২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসনটি মূলত জাতীয় পার্টির দূর্গো হিসেবে পরিচিত। এই আসনে নব্বইয়ের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও বেশির ভাগ সময় এ আসনে রাজত্ব করে জাতীয় পার্টি। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে লাঙ্গল নিয়ে জয়লাভ করেন জাতীয় পার্টির নেতা গোলাম হোসেন, ২০০১ সালে গোলাম হাবিব দুলাল। ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির দুর্গে হানা দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাকির হোসেন। ২০১৪ সালে নৌকাকে হারিয়ে বিজয়ী হন আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টির (জেপি) রুহুল আমিন (সাইকেল মার্কা)। ২০১৮ সালে নির্বাচনে আসনটি পুনরুদ্ধার করেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী জাকির হোসেন। বর্তমানে কুড়িগ্রাম-৪ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি মোঃ জাকির হোসেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। এলাকার তিনটি উপজেলা চেয়ারম্যান পদের মধ্যে চিলমারীতে জাতীয় পার্টি, রৌমারীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও রাজিবপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে দখলে রেখেছেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য দলীয় মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের তৎপরতা এলাকায় শুরু হয়ে গেছে। মাঠে, হাট-বাজারে, চায়ের দোকানে আড্ডায় পক্ষে-বিপক্ষে থাকছে নানা যুক্তি। মোড়ে মোড়ে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড এবং ডিজিটাল ব্যানার। তাদের নানামুখী তৎপরতায় ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা এখন নির্বাচনী আমেজে।
আগামী নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন দেয়া হোক না হোক জাতীয় পার্টি এ আসনে নির্বাচন করবে। কেননা, এ আসনে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী একটা অবস্থান রয়েছে। ২৮ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান শাহীন, রাজীবপুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ইউনুছ আলী ও জাতীয় পার্টি রৌমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট সমাজসেবী এ,কে,এম সাইফুর রহমান (বাবলু) এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ চালাচ্ছেন। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে অধ্যক্ষ ইউনছ আলী দীর্ঘদিন ধরে জাপা’র রাজনীতিতে সংযুক্ত আছেন। তাকে ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। কিন্তু তিনি দলীয় চেয়ারম্যান মরহুম হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এর নির্দেশে নির্বাচন থেকে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ঐ সময় জাতীয় পার্টির অনেক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় পরবর্তীতে এমপি নির্বাচিত হয়। নানা কারণে জাতীয় পার্টি রৌমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এ,কে,এম সাইফুর রহমান (বাবলু) শক্ত ভাবে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করায় এলাকায় তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি হয়েছে। সাইফুর রহমান বাবলু প্রতিদিন পাড়ামহল্লা ঘুরে জাতীয় পার্টির উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরে এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। চিলমারী উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি চিলমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রুকুনুজ্জামান শাহীন চিলমারীবাসীকে নিয়ে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। তিনি কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাধারণ মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপা’র সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী গণসংযোগ চালাচ্ছেন।