কুড়িগ্রাম থেকে- রফিকুল হায়দার

কুড়িগ্রামের খেয়ার আলগা পোড়ার চরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় ৩ শতাধিক কোমলমতি শিশু এখন শিক্ষা বঞ্চিত। বিদ্যালয়ের দাবি জানিয়ে যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন চরটির শিশু ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেছে। বিদ্যালয়ের অভাবে খেলাধুলা আর বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে এসব শিশু। অনেক অভিভাবক তাদের ঝড়ে পড়া সন্তানদের ঢাকায় গার্মেন্টস্ এবং ঝিয়ের কাজে নিয়োজিত করছে।

 

অভিযোগে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী চরে আরাজি পিপুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান তার খেয়ালখুঁশি মত খাসের চর (পোড়ার চর) এ বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। যে চরটিতে আরো দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। একটি হলো সানু মেমোরিয়াল সোসাইটি স্কুল এবং এনজিও ভিত্তিক ফ্রেন্ডস্ শিপ স্কুল। একই চরে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কারণে এক স্কুলের শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুলে নাম রেজিস্ট্রিভূক্ত করা হচ্ছে। এতে একই নাম একাধিক স্কুলে ব্যবহৃত হচ্ছে। অপরদিকে খেয়ার আলগা পোরার চর এবং পার্শ্ববর্তী একাধিক চরের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী থাকার পরেও সেখানে কোন বিদ্যালয় না থাকায় শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা।

খেয়ার চরের এলাকার মাহবুবুর রহমান জানান, আমদের চরের সন্তানদের দিয়ে আরাজী পিপুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থী দিয়ে ভরে যেতো। বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান নদী বিচ্ছিন্ন এবং বিদ্যালয় স্থাপন করার অনুপযোগী খাসের চর (পোড়ার চর) এ স্থানান্তরিত করেছে। এখন আমাদের বাচ্চারা ওই চরে নদীর বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে যেতে পাচ্ছে না। খেলাধুলা আর অলস সময় কাটিয়ে দিন যায় তাদের। 

আরাজী পিপুলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুবানা আক্তার বলেন-নদীর কারণে এখন আর স্কুলে যেতে পারছি না। কারণ আমার বাড়ি খেয়ার চরে। স্কুল হলো খাসের চরে। স্কুল যেতে না পেরে খুব খারাপ লাগতেছে।  

একই স্কুলের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সালমা খাতুন জানান, নদী ভাঙ্গার কারণে এক বছর যাবত স্কুল যাই না। কারণ স্কুলে নৌকাযোগে যেতে হয়। 

শিক্ষার্থী অভিভাবক জেসমিন বেগম বলেন-আমাদের চরের বাচ্চারা এখন আর স্কুলে যেতে পারে না। প্রধান শিক্ষক আতাউরের ষড়যন্ত্রে আমাদের সন্তানরা এখন শিক্ষা বঞ্চিত। আমরা কর্তৃপক্ষের নিকট খেয়ার আলগা পোরার চরে স্কুল প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছি। 

এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফর রহমান জানান, নিয়মের বাইরে গিয়ে অন্যত্র স্কুল প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ নেই। নিয়ম মেনেই উপযোগী জায়গায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হবে। কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *