কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
নতুন সংযোগ দেয়ার কথা বলে টাকা দাবী করায় কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে পল্লী বিদ্যুতের দুই কর্মকর্তাসহ সিন্ডিকেটের এক সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে আটক করেছে স্থানীয়রা। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা একজোট হয়ে পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় টেকনিসিয়ান নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুড়ে ৮ কি.মি. এলাকায় বিদ্যুতের নতুন সংযোগের অনুমোদন নিয়ে আসেন সম্প্রতি। স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস দুই একের মধ্যে সেখানে কাজ করার কথা। এর মধ্যে অফিস বন্ধের দিন শুক্রবার দুপুরে পল্লী বিদ্যুতের কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক অফিসের স্টিং ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম, ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ, ভুরুঙ্গামারী অফিসের সিন্ডিকেট সদস্য রফিকুল ইসলাম বলদিয়ার উত্তর বলদিয়া হাওড়ারপাড় গ্রামে গিয়ে সেখানে নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে জানিয়ে লোক দেখানো এলাকা মাপজোক করে বাড়ি প্রতি তিন হাজার করে টাকা দাবী করে। পরে স্থানীয় লোকজন ও নাজমুল তাদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই তিনজনকে আটক করার চেষ্টা করলে মাসুদ কৌসলে পালিয়ে গেলেও আটক হয় আমিনুল। প্রায় দুই ঘন্টা আটক রাখার পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করেন সিন্ডিকেটে সদস্য রফিকুল ইসলাম দক্ষিণ বলদিয়া তালতলা গ্রাম থেকে ৬০ হাজার, কেদার ইউনিয়নের শব্দের মোড় মাঝিপাড়ার লোকজনদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
স্থানীয় নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেক দপ্তর ঘুড়ে ৮কি.মি. এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগের প্রাথমিক কাজের অনুমোদন নিয়ে এসেছি। হঠাৎ করে স্টিং ইঞ্জিনিয়ার ও আমিনুল ও ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ এসে লোক দেখঅনো মাপামাপি করে বাড়ি প্রতি তিন হাজার করে টাকা দাবি করে। পরে তাদের আটক করে রাখা হলে ভুরুঙ্গামারী থেকে সিন্ডিকেটের লোকজন ভয়ভীতি দেখায়। অনেকে কাজটা দ্রুত করে দেয়ার কথা বলে। প্রায় দু’ঘন্টা পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ভুরুঙ্গামারী জোনাল অফিসের অ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার মোরশেদুল হক জানান, অফিস বন্ধ ছিল। বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম অফিসের আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ার মতিয়ার রহমান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনানুগ ববস্থা গ্রহণ করা হবে। শুক্রবারে তাদের অফিস আদেশ ছিলো না বলেও তিনি জানান। অভিযুক্ত আমিনুল জানান, ২২ শে জানুয়ারী জেনারেল মানেজার তাকে অফিস আদেশ দিয়েছিলেন এবং আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ার মতিয়ার রহমান বিষয়টি জানেন। তবে মাসুদ সেখানে যাওয়া কথা অস্বীকার করে বলেছেন তিনি ভূরুঙ্গামারীতে আছেন। নাজমূল জানায়, বিষয়টি ঘোলাটে হলে তার বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিস্তার পায় ওই ইঞ্জিনিয়ার। পরে রাতে ভূরুঙ্গামারীতে বসে ওই এলাকায় দ্রুত লাইন নির্মাণের শর্তে বিষয়টি মিটমাট করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ মন্ত্রানালয়ের এক ডিওতে জেলায় আগামী বছরের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুৎতায়ন করার নির্দেশ রয়েছে। এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে শতভাগ বিদতায়ন করতে হবে। নির্দেশ মোতাবেক ক্রমানুযায়ী লাইন নির্মাণ করার কথা থাকলেও মানা হচ্ছে না এসব। টাকার বিনিময়ে হচ্ছে সব কিছু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *