খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের খানসামায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় মুক্তিযোদ্ধাদেরকে কটুক্তি ও গালিগালাজ করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে খানসামা উপজেলা প্রেসক্লাবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসেন চৌধুরী নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলামের বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটুক্তি ও গালিগালাজ করায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা বলেন, গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম খানসামা ডিগ্রি কলেজ মাঠে তাঁর নির্বাচনী সভায় বক্তব্যের এক পর্যায়ে খামারপাড়া ইউনিয়নের দুহশুহ চৌধুরী পরিবারের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম (রব্বানী) চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য এবং তারা চুরি, ডাকাতি, খুন ও ছিনতাই করেছে বলে বক্তব্য দেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরায় তার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সহ সর্বস্তরের জনগণের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কে এধরনের উগ্র ও নির্লজ্জ বক্তব্যে দেশের গর্বিত সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্ল্য করে স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রের এজেন্ট, নাকি ৭১ এর রাজাকার আলবদরের উত্তরসূরী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কটুক্তি করায় সাইফুল ইসলামকে অবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান তারা।

তবে সংবাদ সম্মেলন বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচনি প্রচারণায় আমার সভা সমাবেশে মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ দেখে একটি মহল নির্বাচনের আগেই তাদের পরাজয় বুঝতে পেরে আমার নামে নানাভাবে নানা লোক দিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। সম্প্রতি খানসামা ডিগ্রী কলেজে নির্বাচনি ভাষণকে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে আমার ঐ বক্তব্যে আমি কোনো নির্দিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মান করিনি। আমি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু আমি কারো নাম উল্লেখ করে কাউকে হেয় করিনি বা অসম্মান করিনি। আমি আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে সব সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা করি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বুকে ধারন ও লালন করি। মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে নানা ভাবে নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উপস্থাপন করে আসছিলো। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো ভিন্ন। গোপনে অবস্থান ছিলো দেশের বিরুদ্ধে এবং জনগণের অর্থ লুটপাটের। সারা দেশেই এমন অনেকেই মুক্তিযোদ্ধার লেবাস লাগিয়ে লূটপাট ও নিজেদের আখের গোছানোর চেষ্টা করেছে, পরে মুক্তিযোদ্ধা বনে গেছে। আসলে মনে প্রাণে তারা মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের বিরুদ্ধের লোক। আমি সামগ্রিকভাবে এই বিষয়টি ই বোঝাতে চেয়েছি। তথাপিও, আমার ঐ দিনের বক্তব্য কারো সাথে মিলে গেলে আমি আন্তরিকভাবে দু:খিত। আমি কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য বা কাউকে ছোটো করার জন্য বক্তব্য দেই নি । এটি নিয়ে আপনারা ভুল বুঝবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *