fb_img_1488374609830
জাকির সেলিম বিশেষ প্রতিবেদকঃ
ক্রমান্বয়ে চলনবিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা ঘুঘু পাখি। চললবিলের প্রতিটি গ্রামেই দেখা মিলত ঘুঘু পাখির দল। লাজুক পাখিগুলো লোকালয়ে বসবাস করলেও নিজেকে সবার অগোচরে আড়াল করে রাখতে বেশি পছন্দ করে।
এরা সচরাচর কৃষি খামার,ঝোঁপ ঝাড়,বন জঙ্গলে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করে।
এলাকায় ঝোঁপ-ঝাড়, বন-জঙ্গল উজাড় হওয়ায় নিরাপদ আবাস্থলের অভাব,পরিমিত খাদ্যের অভাব, নির্বিচারে পাখি নিধন, ফসলের জমিতে অধিকমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত ঘুঘু পাখি দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে।
চলনবিলের পথে-প্রান্তরে এখন আর সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় ঘুঘু পাখির মিষ্টি মধুর ডাক শোনা যায় না।

এক সময় চলনবিলের সৌখিন মানুষ খাঁচায় আটকে ঘুঘু পাখি পুষতো। কেউ কেউ ঘুঘু বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বিশেষ করে যাযাবর সম্প্রদায় অভিনব কায়দায় ঘুঘু শিকার করতো।
মূলত ধানই ঘুঘুর প্রধান খাদ্য। তাছাড়া ঘাস ও আগাছার বিচি, শস্যদানা, পোকা-মাকড়,গাছের কুঁড়ি ও কচি পাতাও খায় এরা।
চলনবিলের গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির ঘুঘু দেখা যায়। তার মধ্যে রাম ঘুঘু, মেঠে ঘুঘু, লাল ঘুঘু ও তিলি ঘুঘুই বেশি দেখা যায়। স্ত্রী ঘুঘু সাধারণত বছরে একবার এক জোড়া ডিম পাড়ে। মাত্র ১২ দিনে সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে।
এক সময়ে গ্রামের মাঠে মাঠে, গাছের ডালে ডালে ঘুঘু পাখির দেখা গেলেও এখন এ পাখির দেখা পাওয়াই যায় না। প্রতিনিয়িত শিকারীদের হাতে ধরা পড়া ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে অত্যন্ত ভীতু ও লাজুক প্রকৃতির ঘুঘু পাখি প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণি আইন অনুযায়ী পাখি শিকার দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন অমান্য করে কেউ পাখি শিকার করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *