মোহাম্মাদ মানিক হোসেন, চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ১২টি ইউনিয়নে পাট কাটা আর ধোয়ার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। চাষিরা সম্ভাবনার আশায় বুক বেঁধে পাটের বাজার দরেও চাষিরা সন্তুষ্ট। তবে শেষ পর্যন্ত পাটের এমন দাম থাকবে কিনা শঙ্কিত কৃষক। চিরিরবন্দরের অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট অন্যতম। সোনালী আঁশ নামে খ্যাত বাংলাদেশের এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হতো। পাটের মৌসুম এলেই বিশেষ করে বর্ষার শুরুতে চাষিদের মুখে ফুটে উঠতো আনন্দের ঢেউ। আর বর্ষা মৌসুমে জমিতে রোপা লাগার কাজ শেষ করার পর বসে থাকা দিনগুলিতে কৃষাণ-কৃষাণীরা ঘরে ঘরে পাট দিয়ে তৈরি করতো দড়ি, রঙিন চট, মাদুর, শিকে ও ব্যাগ। এছাড়াও মেশিনের সাহায্যে তৈরি হতো পাটের বস্তা, কম্বলসহ নানা জিনিসপত্র। কিন্তু আজ এসব শুধুই স্মৃতি।
দেশের পাটকলগুলো একের পর এক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কমতে থাকে পাটের চাহিদা আর বিশ্ব বাজার। ফলে, চাষিরা সেচ যন্ত্রের সাহায্যে পাট চাষের ওইসব জমিতে প্রধান খাদ্য শস্য ধান চাষ শুরু করে। আর উঠে যেতে থাকে দেশে অন্যতম অর্থকরী ও ঐতিহ্যবাহী এই ফসল চাষ। তবে, এসবের মাঝেও এ বছর চাষিরা জমিতে পাটবীজ বপন করার পর অতিরিক্ত অনাবৃষ্টির কারণে অনেক স্থানে বীজের অঙ্কুরোদগম না হলেও পরবর্তীতে আবহাওয়া অনকুলে থাকায় এ বছর মাঝারি আকারে পাটের ফলন বেশ ভালো হয়েছে।
পাটাচাষী মুকুল, মকসেদ আলী, রশিদুল ইসলাম, জাকির ও রমিজ উদ্দিনের সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে বীজ, নিড়ানি, হালচাষ, পাট কাটা ও ধোয়া বাবদ খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। পাটের ফলন হয়েছে বিঘা প্রতি ১৮ থেকে ২০ মন। বর্তমান বাজারে প্রতিমন পাট বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৬শ টাকা দরে। আর পাটকাঠি জ্বালানি হিসেবে খুব সহজে ব্যবহার করে এবং চাষিরা প্রয়োজনে অতিরিক্ত পাটকাঠি বিক্রি করে অর্থ আয় করেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মাহমুদুল হাসান বলেন, চিরিরবন্দরের মাটি পাট চাষের জন্য খুবেই উপযোগী। তাছাড়া এবারে পাট চাষের অনকুল আবাহাওয়া বিরাজ করায় আবাদ ভালো হয়েছে। কৃষক দাম ভালো পেলে আবারো পাটের সুদিন ফিরবে। মর্যাদা পাবে পাট চাষ। এ বছর চিরিরবন্দরে ১ হাজার ৪ শত ২৫ হেক্টর জমিতে দেশী এবং তোষা জাতের পাট চাষ করা হয়েছে।