মোহাম্মদ মানিক হোসেন,চিরিরবন্দর(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
বর্তমান সরকার যেখানে দেশকে ডিজিটাল করার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি গ্রাম ও প্রতিটি বাড়িতে ভুর্তুকির মাধ্যমে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছেন আর ঠিক তখনই এই সুযোগেই কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নাম করে গ্রামের অসহায়, গরীব ও অশিক্ষিত নিরীহ মানুষদের ধোকা দিয়ে অবৈধ ভাবে আয় করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। বছরের পর বছর এই প্রতারকরা এই সব অসহায় মানুষদের মিথ্যে বাহানা দিয়ে আসছে।

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের উত্তরপলাশ বাড়ি মাওলানা পাড়া গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে ৩ শতাধিক পরিবারের মাঝে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় এক বছর আগে টাকা দিলেও এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি গ্রামবাসী। বিষয়টি দেখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের মাওলানা পাড়া গ্রামের ৩ শত পরিবার। এসব পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে মাওলানা পাড়া গ্রামের মৃত বজলার রহমানের দুই পূত্র মইনুল হক ও তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম মুক্তা এবং তাদের দুই সহযোগী মোস্তাফা ও জাবেদ আলী প্রায় ৪ লক্ষ টাকা বিভিন্ন অযুহাতে দফায় দফায় হাতিয়ে নিয়েছে বলে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা । বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কথা বলে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার জন্য ভুক্তভোগীরা গরু, ছাগল বিক্রি ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকেও টাকা উত্তোলন করেছে। মাওলানা গ্রামের জিয়ারুল হক বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য খুব কষ্ট করে ১ হাজার টাকা দেই পরে আরেক দফায় আরো ১ হাজার টাকা মইনুল ইসলামরে সহযোগি মোস্তফার হাতে দেই। কিন্তু প্রায় এক বছর হয়ে গেলেও বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পাইনি। এখন টাকা ফেরৎ চেয়েও পাচ্ছি না।
একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, মাহমুদা খাতুন, মোতাহারুল ইসলাম, সিফাত শাহ্,আব্দুর রহিম,তরিকুল ইসলাম,নুর মোহাম্মদ,রিয়াজুল ইসলাম,মাছুম,আবু-বক্কর,দুলাল,জয়নুল ইসলাম,আজাহার হোসেন,আনোয়ার হোসেন,আরমান হোসেন,মকবুল হোসেন,ফেরদৌস আলম,তুহিন মান্নুসহ ১৫/২০ জন বলেন, বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য কষ্টে জমানো টাকা দেয়া হয়েছিল। টাকা নেয়ার সময় তাদের কত তোড়জোড় ছিল। মনে হয়েছিল বিদ্যুৎ চলে আসবে। টাকা নেয়ার পর বিদ্যুৎতের দেয়ার কোন নাম নেই ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মইনুল হকের সাথে কথা হলে তিনি টাকা নেয়ার বিষয়ে অস্বিকার করে বলেন ,পারিবারিক জমি সংক্রান্ত দন্ডের জের ধরে আমাদের প্রতি ঈষানিত হয়ে কতিপয় কয়েকজন এই অভিযোগ দিয়েছে।
দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরি-১ এর রাণীরবন্দর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো: আশরাফুল হক বলেন, কোন দালাল চক্রের হাতে পড়ে বিদ্যুৎ দেয়ার নাম করে গ্রামের নিরীহ কোন মানুষ যাতে টাকা না দেয় সে জন্য আমরা গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাইকিং করে সর্তক করে দিয়েছি। এলাকাবাসীর দালালের মাধ্যমে প্রতারিত হয়ে থাকলে অফিস এটার সঙ্গে জড়িত নয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: গোলাম রব্বানী জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তের জন্য থানা অফিসার ইনচার্জকে দায়িত্ব দিয়েছি। তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি প্রমানিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রায়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
চিরিরবন্দর অফিসার ইনচার্জ মো: হারেসুল ইসলাম এর সাথে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,টাকা নেয়ার বিষয়ে তদন্ত চলতেছে,আমি ছুটিতে আছি এই বিষয়ে পরে কথা বলবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *