ফারহানা আক্তার, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে যৌতুকের বলি হলেন গৃহবধূর আফিয়া আঞ্জু (১৯)। গলাই ফাঁস দিয়ে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেওয়ার
অভিযোগ উঠেছে স্বামী, শাশুড়ীর বিরুদ্ধে। উপজেলার উত্তর মহেষপুর ভোলার চড়া গ্রামের মাছুদুর রহমানের বাড়ী থেকে গতকাল বিকেল ৪টায় ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ। নিহত আফিয়া আঞ্জু উপজেলার দাশড়া উত্তর পাড়া গ্রামের বুলু মিয়ার মেয়ে। নিহতের বাবা বুলু মিয়া বলেন, গত ৬ মাস আগে আমার মেয়েকে বিয়ে
দিয়েছিলাম উত্তর মহেষপুর গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মাছুদুর রহমান (২৫) এর সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে চাপ দিতে থাকে জামাই মাছুদুর ও শাশুড়ী নুরুনাহার। মাছুদুরও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমার
কাছে টাকা চাইত । আমি টাকা না দিলে তারা আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করত। আমার মেয়েকে তার শাশুড়ী বলে ছেলেকে অন্যত্র বা আমার বোনের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিলে অনেক টাকা পয়সা ধনসম্পদ পেতাম।
আমি তাদেরকে যৌতুকের টাকা দিতে পারিনি বলে আমার মেয়েকে তারা মেরে গলায় দড়িদিয়ে আত্মহত্যার কথা বলছে। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি।প্রতিবেশি মরিয়ম জানান, আঞ্জুর স্বামী মাছুদুরকে বাড়ীতে দেখিনি। ওই দিন তার মা নুরুনাহার, খালাত বোন বৃষ্টি, মামি নাদিরা, খালা ছালমা বাড়ীতে ছিলেন। বিকেল ৩টার দিকে নিহতের শাশুড়ী নুরুনাহার চিৎকার দিয়ে বলে তার ছেলের বৌ আফিয়া গলাই দড়ির ফাঁস দিয়েছে। চিৎকার শুনে তাদের বাড়ীতে
গিয়ে দেখি নিথর হয়ে মাটিতে পরে আছে আফিয়া। তার শাশুড়ী নুরুনাহার বলছে, তার ছেলের বৌ আফিয়া শোবার ঘড়ে ফ্যানের সঙ্গে দড়ি বেধে গলায় ফাঁস দিয়েছে। জানতে পেরে ঘরে গিয়ে সাথে সাথে গলার দড়ি কেটে দিয়ে তাকে
মাটিতে নামায়, তখন সে জীবিত ছিল। এমন অবস্থা দেখে তাকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ডাক্তারের নিকট নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। হত্যা না আত্মহত্যা এনিয়ে এলাকায় গুনজন।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানা ওসি রওশন ইয়াজদানী বলেন, প্রাথমিক সুরতহাল তদন্তে হত্যার আলামত মিলেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছি। নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছে। নিহতের স্বামী,শাশুড়ী ও আন্যান্য আসামী পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *