ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ বাণিজ্য ও সরকারী রাজস্ব তছরুফের অভিযোগে ঝালকাঠি গনপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হারুন অর রশিদ’র বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় শোকজ করেছে আদালত। স্থানীয় ঠিকাদার কামাল শরীফ বাদী হয়ে ঝালকাঠি যুগ্ন জেলা জজ ১ম আদালতে দায়েরকৃত এ মামলায় (দেং মোং নং-০৭/২০১৮) শুনানী শেষে সোমবার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশীদকে শোকজ করে পরবর্তী তারিখে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একই অভিযোগে উক্ত ঠিকাদার আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত আবেদন করেছে।
মামলা সূত্রে ও বাদীর অভিযোগে জানাগেছে, ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশীদ বিরুদ্ধে দরপত্র প্রক্রিয়ায় সরকার প্রদত্ত বিধিমালা ও নিয়মনীত অগ্রহ্য করার অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন। আইন অনুযায়ী টেন্ডারে অংশ গ্রহনকারী ঠিকাদারদের মধ্যে সর্বনিম্ম দরদাতাকে কার্যাদেশ দেয়ার কথা থাকলেও নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন তাঁর ইচ্ছে মত কাজ বন্টন করেন। অভিযোগ রয়েছে, তার চাহিদা মতো নগদ অর্থ দিলেই কাজ পাওয়া যায় তাঁর দপ্তরে।
সঠিক প্রক্রিয়ায় দরপত্র জমা দিলেও যারা ঘুষের টাকা দিতে অপারগতা জানায় তাদের কাজ দেওয়া তো দূরের কথা প্রতিযোগীতাতেই অংশ গ্রহন করতে দেয়া হয় না বলেও অভিযোগ ঠিকাদারদের। নির্বাহী প্রকৌশলীর এহেন অনৈতিক কর্মকান্ড ও অর্থলিপ্সায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ঠিকাদাররা। এধরনের একটি সুস্পষ্ট দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার ঘটনায় যুবলীগ নেতা ঠিকাদার মো. কামাল শরীফ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. কামাল শরীফ অভিযোগ করে বলেন, ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ থেকে গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রায় ৬৩ লাখ টাকার অনুকুলে সাতটি কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরমধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংস্কারের জন্য এক লাখ, জেলা ও দায়রা জজের বাসভবন সংস্কারে ৪ লাখ, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি ফলক নির্মাণে এক লাখ ৭০ হাজার, সার্কিট হাউজের দেয়াল বর্ধিত করণ ১৯ লাখ, সিভিল সার্জ কার্যালয়ে রংয়ের কাজে এক লাখ ৫০ হাজার, জেলা প্রশাসকের বাসবভনের সামনে ড্রেন নির্মাণে ১৩ লাখ ও আনসার বিডিপির ব্র্যাক নির্মাণে ২২ লাখ টাকা ধার্য রয়েছে।
অভিযোগে সে আরো জানান, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ধার্য করা হলেও দরপত্রে সর্বনিন্ম দরতাদাকে কাজ না দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন তাঁর পছন্দমত ঠিকাদারদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা লাভের বিনিময়ে সাতটি কাজই দিয়ে দিয়েছেন। এরমধ্যে সর্বনিন্ম দরদাতা হওয়া সত্বেও কোন প্রকার কারন ছাড়াই মেসার্স এমপি বিল্ডার্সের সত্বাধীকারী মো. কামাল শরীফকে কাজ দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তিনি গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী হারুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে পরে জানানো হবে বলে জানান।
এ ভাবে একাধিকবার নির্বাহী প্রকৌশলী হারুনের কাছে গেলেও তিনি বরাবরের মতোএকই উত্তর দিয়ে তালবাহানা ও কালক্ষেপন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সর্বনিন্ম দরদাতা হিসাবে ঠিকাদার কামাল শরীফ বাদী হয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করেন।