মসলেম উদ্দিন,নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভেরখাষ ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক চন্দ্র দাস পেশায় ঝাড়–দার। নিয়মিত কাজ না থাকায় বিভিন্ন স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তবলা বাজিয়ে তার সামান্য আয়ে পরিবার চালায়। থাকেন সরকারি খাষ জমিতে। দুটি টিনের চালায় তিন সন্তান মিলে পাঁচ সদস্যের পরিবার।
এমনিতে তেমন আয় নেই সংসারে। তার উপর পাঁচ সদস্যের খরচ। কোনমতে দিন চলে তাদের। কিন্তু এরমাঝে দুই সন্তান থ্যালাসামিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন থেকে দুই সন্তানের চিকিৎসার খরচ মেটাতে সর্বশান্ত কার্তিক চন্দ্র। এখন আর চিকিৎসা করাতে পারছেনা অর্থাভাবে। বিনা চিকিৎসায় চোখের সামনে দুই সন্তানের মৃত্যুর ক্ষন গুনছে বাবা-মা। দুই শিশু সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে শুধু কান্নায় আসে তাদের।
কার্তিক জানায়, ২০১৬ সালে বড় ছেলে সাগর কুমার (১৪) থ্যালাসামিয়ায় আক্রান্ত হয়। সে চিকিৎসায় থাকা অবস্থায় ছয় মাস পরে ছোট ছেলে শাওন কুমার দাসও (১০) একই রোগে আক্রান্ত হয়। দুই সন্তানের চিকিৎসায় নি:স্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি। ধারদেনা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। ঘরের সব আসবাব-পত্র, খুটি, টিন বিক্রি করে চিকিৎসা করেও তেমন উন্নতি হয়নি। শেষে জীবিকার একমাত্র সম্বল বাদ্যযন্ত্র ডুবি-তবলা, হারমনিয়াম বিক্রি করে সন্তানের চিকিৎসা করান কার্তিক। বর্তমানে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসক ডা. মো. হেলাল মিয়ার চিকিৎসাধীন রয়েছে দুই ভাই। ১৫ দিন পরপর ছোট ছেলে শাওনকে রক্ত দিতে হয়। বড় ছেলে সাগর কুমার কিছুটা সুস্থ্য হয়েছে। তবে ওষুধ নিয়মিত চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ওষুধ ও চিকিৎসায় প্রতি মাসে প্রয়োজন প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বর্তমানে এ টাকা খরচের সামর্থ্য নেই তাদের পিতার। এ কারণে চিকিৎসা প্রায় বন্ধ হতে বসেছে।
এ প্রসঙ্গে কার্তিক চন্দ্র দাস জানান, এমনিতে আমি গরীব মানুষ। সম্পদ বলতে তেমন কিছু নেই। যা ছিল দাও দুই সন্তানের পিছনে সবকিছু শেষ। বাদ্যযন্ত্র দিয়ে সংসারটা চলতো তাও বিক্রি করেছি। এখন চোখের সামনে দুই ছেলের ক্ষয় দেখছি। জানিনা কি হবে। ছেলে দুটিকে বাঁচাতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। তার ০১৭১৯ ৭০৯ ৬৯৩ এ নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেছেন।