এস এম রকি ঃ
দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা, ভালো বাসা ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান “স্বাধীনতা পদকে” ভূষিত দিনাজপুরের কৃতি সন্তান দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয় ন্তীতে “স্বাধীনতা পদক” প্রাপ্তিতে গতকাল দিনাজপুরে এক নাগরিক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দিনাজপুরবাসীর জন্য গর্ব বয়ে নিয়ে আসার জন্য এই সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রফেসর ডাঃ এম. আমজাদ হোসেনকে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে আসেন দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ। গতকাল শনিবার বিকেলে দিনাজপুর শিল্পকলা একা ডেমী মিলনায়তনে এই সম্বর্ধনা অনু ষ্ঠানের আয়োজন করে অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেন নাগ রিক সম্বর্ধনা কমিটি, দিনাজপুর। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আয়োজক কমিটি সহ দিনাজপুরের বিভিন্ন রাজ নৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সেচ্ছাসেবী, চিকিৎসক সং গঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় দিনাজপুরের কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেনকে। ফুলে ফুলে ভরে যায় সম্বর্ধনাস্থল। অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে ক্রেষ্টও দেয়া হয় সম্বর্ধিত অতিথি অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেনকে। এরপর শুরু হয় আলোচনা পর্ব। আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, দিনাজপুরের কৃতি সন্তান যুদ্ধাহত বীর মুক্তি যোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেনকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্ছ সম্মান “স্বাধীনতা পদকে” ভূষিত করায় দিনাজপুর বাসীকে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৭৫ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বাধীনতার বিরোধীদের পুরস্কৃত করা হয়েছিলো। এদেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়ে ছিলো। কিন্ত বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে এদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যোগ্যতার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। মুক্তিযো দ্ধাদের তাদের যোগ্য সম্মান দিয়ে ছেন। দেশের উন্নয়ণ ও অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তি যুদ্ধের চেতনা লালন করার আহ্বান জানান তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, একটি স্বাধীন সার্ব ভৌম রাষ্ট প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্ছ ত্যাগ করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন তারই যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। জাতিকে শুধু কলঙ্কমুক্তই করেননি, বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে দাড় করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোনার বাংলায় প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ করে চলেছেন তিনি। আর এজন্যই বাংলাদেশ প্রতিটি ক্ষেত্রেই এগিয়ে চলেছে। ৫০ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত অতিথি স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর এদেশে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দেয়া দুস্কর হয়ে পড়েছিলো। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে পারতাম না। কিন্তু তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আমরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানিত হয়েছি। জাতির জনকের আহ্বানে মুক্তিযোদ্ধারা যে আশা ও আকাংখা নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলো, সেই আশা ও আকাংখা অনুযায়ী এখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দিনাজপুরকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দিনাজপুরকে আরও এগিয়ে নিতে মনের ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেন নাগরিক সম্বর্ধনা কমিটি, দিনাজপুরের আহ্বায়ক আজিজুল ইমাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এড. জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই, দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএমএ, দিনাজপুরের সাধারন সম্পাদক ডাঃ বিকে বোস, মহিলা পরিষদ দিনাজপুরের সভাপতি কানিজ রহমান, ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষে আলহাজ্ব জহির শাহ, নাগরিক সমাজের পক্ষে শফিকুল ইসলাম ও মুক্তিযোদ্ধা সাইফুদ্দিন আখতার। সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন সম্বর্ধনা কমিটির সদস্য সচিব আব্দুস ছামাদ চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, বাচিক শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ২০২১ সালে সমাজ সেবায় স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন দিনাজপুরের কৃতি সন্তান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *